কক্সবাজারের ডিসিকে হাইকোর্টে তলব
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী

ফ্লাইওভারের দেয়াল লিখন-পোস্টার অপসারণে নির্দেশ হাইকোর্টের

রাজধানীর ফ্লাইওভারগুলোতে দেয়াল লিখন ও পোস্টার অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।

রুলে আদালত ফ্লাইওভারগুলোতে দেয়াল লিখন ও পোস্টার অপসারণের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারী দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

সেই সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দেয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১২ এর ৬ ধারা অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া আগামী ৭ দিনের মধ্যে একটা মনিটরিং টিম করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যে টিম ফ্লাইওভারগুলোতে দেয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো নিয়ন্ত্রণ করবে।

আদালতে রিটের পক্ষের শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

ঢাকার ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন স্থাপনার দেয়ালে থাকা অবৈধ পোস্টার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, পোস্টারিং ও অবৈধ দখল নগরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

প্রতিটি নাগরিকের খোলা জায়গার অধিকার আছে উল্লেখ করে আদালত আরও বলেন, ‘পোস্টার লাগিয়ে ফ্লাইওভারের পিলার গুলার কী অবস্থা বানিয়ে ফেলছে। প্রতিদিন এগুলার নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখে কী যে কষ্ট লাগে। পোস্টার লাগিয়ে আমাদের শহরটার সৌন্দর্য ধ্বংস করে ফেলেছে। এগুলো অপসারণ করতেই হবে।’

নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার সংগঠনের রিট

এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. সরওয়ার আহাদ ও অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ই এ রিট দায়ের করেন।

রিটে ফ্লাইওভারের দেয়ালে পোস্টারিং ও দেয়াল লিখন বন্ধে তদারকি কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন বাস্তবায়নের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রিটে স্থানীয় সরকার সচিব, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী, রাজউকের চেয়ারম্যান, ঢাকার পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

প্রসঙ্গত, দেয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী ‘নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনও স্থানে দেয়াল লিখন বা পোস্ট লাগানো যাবে না। আইনে বলা হয়েছে, কোনও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দেয়াল লিখন বা পোস্টার লাগাইবার জন্য প্রশাসনিক আদেশ দ্বারা স্থান নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে এবং উক্তরূপে নির্ধারিত স্থানে দেয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাইবে।

তবে শর্ত থাকে যে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে, উল্লিখিত নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনও স্থানে বিধি দ্বারা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে এবং নির্দিষ্ট ফি প্রদান সাপেক্ষে দেওয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাইবে। কোনও ব্যক্তি এই বিধান লঙ্ঘন করিলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ।