গাইবান্ধা প্রতিনিধি : রংপুরে আদালতের বারান্দায় যমুনা টেলিভিশনের করেসপন্ডেন্ট জিল্লুর রহমান পলাশসহ গাইবান্ধার পাঁচ সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালাগালা ও হুমকির ঘটনায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পিআইও নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে নন এফ. আই. আর প্রসিকিউশন মামলা করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ।
জিডির তদন্ত কর্মকর্তা রংপুর কোতয়ালী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) বিজন সাহা গত ২৫ জানুয়ারী রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ আদালতে এই প্রতিবেদন জমা দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তদন্ত কর্মকর্তা বিজন সাহা বলেন, বাদীর জিডির পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিন তদন্তে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় নন এফ. আই. আর প্রসিকিউশন মামলা করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। দন্ডবিধির ৫০৬ ধারা পেনাল কোডে প্রসিকিউশন নং ৪৭/২৩ মামলাটি দায়ের করা হয়।
এর আগে, পিআইও নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে গেল বছরের ২ আগস্ট রংপুর কোতয়ালী থানায় জিডি করেন সাংবাদিক জিল্লুর রহমান পলাশ। প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ গত ৫ আগস্ট জিডিটি থানায় সাধারণ ডায়েরীভুক্ত করেন। ৩৭৭ নম্বরের ওই জিডিটি তদন্তের জন্য অনুমতি চেয়ে আদালতে পাঠান তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বিজন সাহা। পরে গত ১৮ আগষ্ট জিডির তদন্তের নির্দেশ দেয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ম আদালত।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২ আগস্ট দুপুরে রংপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানহানির মামলার হাজিরা দিতে যান জিল্লুর রহমান পলাশসহ গাইবান্ধার পাঁচ সাংবাদিক। এসময় আদালতের বারান্দার ক্যান্টিনের সামনে সাংবাদিকদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন মামলার বাদী পিআইও নুরুন্নবী।
এক পর্যায়ে তিনি পলাশসহ অন্যদের ওপর মারমুখি হয়ে পড়েন। উচ্চস্বরে হাত ও আঙুল উঁচিয়ে বলেন, তোকে দেখে নেবো, তোকে এবার মজা দেখাবো। তুই ১৫০ বান্ডিলকে ৫২০ বান্ডিল দেখিয়ে মিথ্যা নিউজ করেছিস, তুই আমাকে হয়রানি করেছিস, এখন আদালতে এসে হয়রানী হ, ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত, ঘুষ-দুর্নীতির কারণে আলোচিত সুন্দরগঞ্জের সাবেক পিআইও নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিবেদন প্রচার করে যমুনা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম। পরে তদন্তে আর্থিক দুর্ণীতিসহ নানা অভিযোগের প্রমাণ মেলায় বদলিসহ তার বিরুদ্ধে একাধিক বিভাগীয় মামলা করে লঘুদণ্ড দেয় অধিদপ্তর। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর রংপুর আদালতে মানহানির অভিযোগে দুটি মামলা করেন তিনি।