ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা এক মাসের বেশি সময় ধরে চালানো আদালত বর্জন কর্মসূচি থেকে সরে এসেছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে তাঁরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত ছাড়া বাকি আদালতগুলোতে ফিরবেন।
আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা।
তানভীর ভূঞা বলেন, ‘সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাননীয় আইনমন্ত্রী মহোদয় আমাদের যে অনুরোধ করেছিলেন, সেটির প্রতি সবাই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন এবং এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। আইনমন্ত্রী ও আইনসচিব শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নন, সমগ্র বাংলাদেশের আইন অঙ্গনের অভিভাবক। আমরা তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস স্থাপন করি।’
সমিতির সভাপতি বলেন, ‘আমরা আগামী দিন থেকে কোর্টে যোগদান করব। আমাদের বিষয়ে যা যা করার তাঁরা তা করবেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বাদে বাকি সবগুলো কোর্টে যাব।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা বলেন, ‘সবগুলো দাবির কোনো কোনোটা পূরণ হয়েছে এবং বাকিটা পূরণ হবে বলে বিশ্বাস করি। তাঁরা (আইনমন্ত্রী ও আইনসচিব) আমাদের অভিভাবক, আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারেন বলে বিশ্বাস করি না।’
গতকাল রোববার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউসে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জেলার বিভিন্ন আদালতের বিচারক ও পুলিশ-প্রশাসনসহ আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সভা শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্জনের বিষয়টি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। আইনজীবীরা আদালত বর্জন প্রত্যাহার করবেন। আইনজীবীরা কাল আদালতে যাবেন।’
এদিকে আজ সকাল ৯টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে ঘুরে জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় আইনজীবীদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। একজন-দুজন করে আইনজীবী আসছিলেন।
আইনজীবী সহকারী সমিতি ভবনেও সহকারীদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। আদালত ভবনে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দপ্তর খুলতে দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিচারপ্রার্থীরা আদালতে হাজির হতে শুরু করেন। তবে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান অচলাবস্থার জন্য পূর্বের মতো আজও বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা দায়রা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে বদলি এবং নাজির মো. মুমিনুল ইসলাম চৌধুরীর শাস্তির দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা দুই আদালত বর্জন করে আসছিলেন। এরপর গত বুধবার থেকে সব আদালত বর্জন শুরু করেন আইনজীবীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো বিচারপ্রার্থী।