মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : এক লক্ষ ৫০ হাজার ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় ৩ রোহিঙ্গাকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একইসাথে দন্ডিত আসামীদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
আজ রোববার (১৯ মার্চ) কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডিত আসামীরা হলেন- মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার সুধাপাড়া গ্রামের মৃত রহমত আলী’র পুত্র মোঃ ইউনুস, আবু শামা’র পুত্র নুরুল হক এবং মৃত আবুল কালাম’র পুত্র মোঃ আনোয়ার। দন্ডিত সকল আসামী পলাতক রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে একই আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ এবং আসামীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হোসেন আদালতে মামলাটি পরিচালনা করেন।
একই কার্যালয়ের জেলা নাজির বেদারুল আলম ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আসামীদের ধৃত করা সাপেক্ষে প্রদত্ত সাজা ভোগ শেষ হলে আইনানুগ ব্যবস্থায় তাদের মিয়ানমারে পুশব্যাক করার জন্য বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল কক্সবাজারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে রায়ে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০১৭ সালের ১৬ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে টেকনাফের নাইট্যং পাড়া ফরেস্ট রেস্ট হাউজের কাছে নাফ নদীতে ২ নম্বর বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে ইঞ্জিন চালিত একটি বোট সহ তিনজন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করে। পরে আটককৃতদের দেখানো মতে বোটটি তল্লাশি করে ১ লক্ষ ৫০ হাজার ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় টেকনাফের ২ নম্বর বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের হাবিলদার মোঃ আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ধৃত রোহিঙ্গা মোঃ ইউনুস, নুরুল হক এবং মোঃ আনোয়ার-কে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৬২/২০২৭, জিআর মামলা নম্বর : ৩৩০/২০১৭ (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ১২৩২/২০১৭ ইংরেজি।
বিচার ও রায়
২০১৮ সালের ১৮ মার্চ মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চার্জ গঠন (অভিযোগ) করা হয়। মামালাটির ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট যাচাই, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য রোববার দিন ধার্য্য করা হয়।
রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৫ ধারা সহ ১৯ (১) ধারার ৯(খ) সারণী মতে দোষী সাব্যস্ত করে আসামী ৩ রোহিঙ্গাকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড এবং দন্ডিতদের প্রত্যককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন।
রায়ে উদ্ধারকৃত ইঞ্জিন চালিত বোটটি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।