আট লাখ ইয়াবা পাচার : তিন রোহিঙ্গাসহ ৪ জনের ১৫ বছর করে কারাদন্ড
এজলাস; জেলা ও দায়রা জজ আদালত, কক্সবাজার

এক লাখ ২২ হাজার ইয়াবা পাচার : কক্সবাজারে একজনের যাবজ্জীবন

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : এক লাখ ২২ হাজার ১৪০ পিস ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় আহমদ কবির নামক এক আসামীকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে দন্ডিতকে ৫ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) এ রায় ঘোষণা করেন।

দন্ডিত আহমদ কবির কক্সবাজার জেলার টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিঠাপানির ছড়ার উত্তর লম্বরী গ্রামের মোঃ হাছন ও ছাহারা খাতুনের পুত্র। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে মামলার অপর আসামী একই এলাকার খুইল্যা মিয়া ও জরিনা খাতুনের পুত্র নুর মোহাম্মদ প্রকাশ খুলুকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে একই আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ এবং দন্ডিত আসামী আহমদ কবির এর পক্ষে অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মাহমুদ ও খালাসপ্রাপ্ত নুর মোহাম্মদ এর পক্ষে অ্যাডভোকেট বাপ্পী শর্মা মামলাটি পরিচালনা করেন।

একই কার্যালয়ের জেলা নাজির বেদারুল আলম ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এসব এ তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি ১১ টা ৩৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিঠাপানির ছড়ার উত্তর লম্বরী গ্রামে কবির আহমদের মুরগির খামারে র‍্যাব-৭ এর একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে আহমদ কবিরকে ধৃত করে। এসময় নুর মোহাম্মদ প্রকাশ খুলু ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে আহমদ কবিরের স্বীকারোক্তি মতে এক লক্ষ ২২ হাজার ১৪০ পিস ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় র‍্যাব-৭ এর একজন কর্মকর্তা বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আহমদ কবির ও নুর মোহাম্মদ প্রকাশ খুলুকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৭২/২০২১, জিআর মামলা নম্বর : ৭২/২০২১ (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৪৬৪/২০২২ ইংরেজি।

বিচার ও রায়

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) টেকনাফ থানার এসআই মোঃ আবদুল বাতেন ২০২১ সালের ৬ মার্চ ১১ জনকে সাক্ষী করে আমলী আদালতে মামলাটির চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। আদালতে চার্জশীট দাখিলের পর ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে চার্জ গঠন (অভিযোগ) করা হয়।

মামলাটির ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট যাচাই, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য্য করা হয়।

রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) ধারার ১০(গ) সারণীতে আসামী আহমদ কবির-কে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) সশ্রম কারাদন্ড, একইসাথে ৫ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন। রায়ে মামলার অপর আসামী নুর মোহাম্মদ প্রকাশ খুলুকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।