পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের ওপর আরও চার সপ্তাহের জন্য স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, এ চার সপ্তাহের মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখে পরবর্তী আদেশ দেবেন।
আজ বুধবার (২৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার ও আইনজীবী মো. ইয়ারুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি ওই রিটের শুনানি আট সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছিলেন হাইকোর্ট। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানির জন্যে ওঠে।
এ বিষয়ে আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, রিটের পর কোর্ট সরকারকে আট সপ্তাহ সময় দিয়েছিলেন। সরকার এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সময় শেষ হলে আজ মামলাটি আবার কার্যতালিকায় আসে। এখানে একটা ডেভেলপমেন্ট আছে। সেটা হলো সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে সেতু বিভাগে একটা চিঠি দিয়েছিল। চিঠিতে বলা হয় রিট আবেদনের ছায়ালিপি বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশক্রমে প্রেরণ করা হলো।
অর্থাৎ আমাদের আবেদনটি মহাসড়ক বিভাগ সেতু বিভাগের কাছে পাঠিয়েছে। এটা আদালতের নজরে আসার পর আদালত বললেন, সরকার যেহেতু এটা টেকআপ করেছে অতএব সময় দেওয়া হোক। এরপর চার সপ্তাহ সময় দিয়েছেন। সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা আশা করি সরকার চার সপ্তাহের মধ্যে একটি রিজেনবল সিদ্ধান্ত নেবেন। ৩৮ লাখ মোটরবাইকের চালক আছে তাদের অধিকার সমুন্নত করবে।
এর আগে বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান কেএম আবু হানিফ হৃদয় এ রিট করেন। যেটি গত ১৫ জানুয়ারি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
রিটে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।
এরপর নতুন করে তিনি আবার রিট করেন। গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়। পরদিন ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ২৬ জুন এক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, পরদিন ২৭ জুন ভোর ৬টা থেকে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। সেই থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ।
রিটের পর তৈমুর আলম খন্দকার জানান, মোটরসাইকেলের লাইসেন্স নেওয়ার সময় আলাদা কোনো স্থানে চলাচলে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। এছাড়া দেশের কোনো ব্রিজেও মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা নেই। এখানে বলা হচ্ছে দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনা তো অন্য স্থানেও হয়। তাই নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার ছিল। যেমন ব্রিজে স্পিড গভর্নর বসিয়ে দেওয়া যেতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষসহ দেশের লাখ লাখ মানুষের স্বপ্ন পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চালানোর।