অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হয় এক ভারতীয় আইনজীবীর সনদ দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। বার কাউন্সিল অব মহারাষ্ট্র এবং গোয়া (বিসিএমজি) এর শৃঙ্খলা কমিটি অ্যাডভোকেটস অ্যাক্ট, ১৯৬১ এর ৩৫ ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত করে অ্যাডভোকেট গুণরতন সদবর্তে নামের ওই আইনজীবীর অনুশীলন লাইসেন্স স্থগিত করেছে।
আইনজীবী গুণরতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২১ সালের নভেম্বরে মহারাষ্ট্র রাজ্য সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (এমএসআরটিসি) কর্মীদের একটি আন্দোলন সহ পাবলিক ইভেন্টগুলিতে তিনি একজন উকিলের অফিসিয়াল পোশাক অর্থাৎ ব্যান্ডসহ কালো কোট পরেছিলেন।
এ ঘটনায় পিম্পরি কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি অ্যাডভোকেট সুশীল মাঞ্চেকার সদাবর্তের বিরুদ্ধে বিসিএমজি-তে অভিযোগ দায়ের করার পরে, তিন সদস্যের একটি কমিটি তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা শুরু করে।
বিসিএমজি চেয়ারম্যান গজানন চ্যাভান, অ্যাডভোকেট কায়সার আনসারি এবং সংগ্রাম দেশাইয়ের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি অভিযোগটি শুনে। অভিযোগে বলা হয়েছিল যে সদবর্তে এমএসআরটিসি কর্মচারীদের ধর্মঘটের সময় “আপত্তিকর” বিবৃতি দিয়েছিলেন এবং বিক্ষোভকারীদের বিভ্রান্ত করেছিলেন যার ফলে অনেক বিক্ষোভকারী আত্মহত্যা করেছিল।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি বিসিএমজি সদাবর্তেকে একটি নোটিশ জারি করে তাকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের জন্য শাস্তিমূলক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করে এবং তাকে অভিযোগের জবাব দিতে বলে। অভিযুক্ত আইনজীবী অবশ্য এই কার্যক্রমকে চ্যালেঞ্জ করে বোম্বে হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন।
পাবলিক প্লেসে ব্যান্ড পরা সম্পর্কে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদবর্তে আদালতে বলেছিলেন, “মারাঠা রিজার্ভেশন কর্মীরাও তার বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ দায়ের করেছিল এবং তা খারিজ করা হয়েছিল। ফলে একই ভিত্তিতে বর্তমান কার্যক্রম ‘ডাবল জেপার্ডি’ হিসাবে পরিগণিত হবে।”
আদালতে তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয় তদন্তটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার উপর ভিত্তি করে এবং অ্যাডভোকেটস অ্যাক্টের চেতনাকে হতাশ করবে কারণ তিনি আবেদনকারীর প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন যিনি মারাঠা সংরক্ষণকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, যা সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা বাতিল করা হয়েছে।
হাইকোর্ট অবশ্য শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করেছিল এবং বলেছিল যে কেবলমাত্র একজন আইনজীবী হওয়ার কারণে এবং অভিযোগটি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করার জন্য সদবর্তেকে কোনও বিশেষ সুবিধা দেওয়া যাবে না। ফলে বিসিএমজি দ্বারা জারি করা নোটিশ অনুযায়ী তাকে প্যানেলের সামনে উপস্থিত হতে বাধা নেই।
অ্যাডভোকেটস অ্যাক্ট, ১৯৬১ এর ৩৫ ধারায় আইনজীবীদের অসদাচরণের জন্য শাস্তির কথা বলা আছে। এতে বলা আছে, কোন একটি রাজ্যের বার কাউন্সিল যদি মনে করে কোনো অ্যাডভোকেট তাঁর পেশাগত বা অন্যান্য অসদাচরণ জন্য দোষী অথবা কোন আইনজীবীর বিরুদ্ধে যদি অসদাচরণ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ আসে তবে তা নিষ্পত্তির জন্য শৃঙ্খলা কমিটির কাছে হস্তান্তর করবে।
নিয়মানুযায়ী আদালত ব্যতীত কিংবা বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা আদালতের নির্দেশ আছে এমন অনুষ্ঠান ব্যতীত একজন আইনজীবী অন্য কোনো পাবলিক স্থানে ব্যান্ড বা গাউন পরা উচিত নয়।