জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এক নারী আইনজীবীসহ তাঁর পরিবারেরর ৩ জনকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্বক আহত করার অভিযোগ উঠেছে।
গত রোববার (২ জুলাই) এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী আইনজীবীর নাম রাবেয়া খাতুন সুমি (৩৬)। তিনি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ঘসিয়াল গ্রামের বাসিন্দা। আহত অ্যাডভোকেট রাবেয়া খাতুন সুমি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবেশী শহর মন্ডল, শাহারিয়ার অপু ও তৌফিক ইমাম বাঁধনদের সাথে তাদের পরিবারের মধ্যে বসত ভিটার জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
বিরোধীয় জমিতে স্বত্ব দাবী করে রাবেয়া খাতুন সুমি মাগুরা জেলা জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা রুজু করেন। কিন্ত প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় মামলাকে অগ্রাহ্য করে নালিশী জমিতে পাকা বিল্ডিং ঘর নির্মান কাজ শুরু করে।
পরে আদালত থেকে ওদের বিরুদ্ধে গত ২২ জুন সমন জারী হয়। আদালতের সমন জারীতে ক্ষীপ্ত হয়ে শহর মন্ডলসহ তার সন্তানরা বাদীর বড় ভাই সুফিয়ার শেখ (৫৬) কে পিটিয়ে মারাত্বক আহত করে।
এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত রোবরার দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার দ্বারিয়াপুর ইউনিয়নের ঘশিয়াল গ্রামস্থ ব্রীজ সংলগ্ন মিরুলের দোকানের পাশে স্থানীয় লোকজনের মধ্যস্থতায় মীমাংসার লক্ষে উভয় পক্ষকে ডাকা হয়।
এসময় উভয় পক্ষের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সাহরিয়ার অপু, তৌফিক ইমাম বাঁধন, শহর মণ্ডলসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবীর পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং অতর্কিত হামলা চালায় এবং ওই আইনজীবীর দেহ থেকে বেশকিছু স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় তারা।
এ বিষয়ে রাবেয়া খাতুন সুমি অভিযোগ করে বলেন, জমিজমা বিষয়ে প্রতিবেশী শহর আলীর সাথে আমার আদালতে একটি মামলা চলছে। এর আগে আদালত থেকে সমন আসায় তারা আমার পরিবারের উপর হামলা করে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছি।
পরবর্তীতে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিশে বসে। সালিশের মধ্যেই ওরা আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমাকে, আমার বোন ও ২ ভাতিজাকে তারা মেরে মারাত্মক আহত করে। আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই, জানান অ্যাডভোকেট রাবেয়া।
এদিকে বিষয়টি অস্বীকার করে এ বিষয়ে অভিযুক্ত অপু মণ্ডল বলেন, শালিসের মধ্যে উনারাই আমাদের উপর চড়াও হয়েছে। এ সময় মারামারির কোন ঘটনা ঘটেনি।
এলাকাবাসী জানান, মারাত্বক আহতবস্থায় আইনজীবী রাবেয়া খাতুন সুমিকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীরত অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় অ্যাডভোকেট রাবেয়া খাতুন সুমি বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা অফিসার ইনচার্জ কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং শাহারিয়ার অপু নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে তবে বাদীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এ বিষয়ে থানায় একটি নিয়মিত মামলা রজু হয়েছে।