জাল সনদে নিয়োগ পাওয়া দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৭৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা চিঠি কেন আইনগত কর্তৃত্ববর্হিভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৪ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি আলী রেজা রুকুর সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতের রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফরহাদ আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মেরিদুল কর্মকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রহিমা খাতুন।
এর আগে রিট আবেদনটি দায়ের করেন রাজবাড়ী জেলার কালুখালি উপজেলাধীন আলহাজ্ব আমেনা খাতুন বিদ্যাপীঠ স্কুলের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মোহাম্মদ সোলাইমান হোসেন।
রিট আবেদনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। পাশাপাশি জাল সনদ দিয়ে চাকরিতে নেওয়ার অভিযোগ ওঠা ৬৭৮ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন (এমপিও) বন্ধ না করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটে শিক্ষা সচিবকে বিবাদী করা হয়।
জাল সনদে নিয়োগ পাওয়া দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬৭৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতেও বলেছে মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের গত ১৮ মে চিঠি দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) এই ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
সাত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। ব্যবস্থার অন্যান্য নির্দেশনার মধ্যে আরও রয়েছে অবৈধভাবে গ্রহণ করা বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে জমা, যাঁরা অবসরে গেছেন তাঁদের অবসর সুবিধা বাতিল, স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের আপত্তির টাকা প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের মাধ্যমে আদায় এবং জাল সনদধারীদের নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) যাচাই-বাছাইয়ে এসব জাল সনদধারী শিক্ষক-কর্মচারী চিহ্নিত করা হয়। এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে সনদ প্রদানকারী দপ্তর প্রধান বা প্রতিনিধির সমন্বয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সনদ যাচাই করে জাল সনদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। তার আলোকে এখন এসব শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।