যুবদলের আইনবিষয়ক সহসম্পাদক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকীসহ দলের ৯ জন নেতা-কর্মীকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। হরতালে পুলিশের কাজে বাধার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
মামলা হওয়ার ১৩ বছর পর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দা গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত অপর আটজন যুব ও শ্রমিক দলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থক। তাঁদের নাম লিটন, এ কে হক সবুজ মিয়া, নজরুল ইসলাম, মোস্তাক আহমেদ, জাকির ব্যাপারী, মো. কালাম, সেলিম ও আবদুর রহিম ভূঁইয়া।
এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন নূরে আলম সিদ্দিকীর আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, নূরে আলমসহ অন্যরা ন্যায়বিচার পাননি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।
দুই বছর কারাদণ্ডের সাজা পাওয়া যুবদলের আইনবিষয়ক সহসম্পাদক নূরে আলমকে গত ২৭ অক্টোবর মালিবাগ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁকে পল্টন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সালের ২৭ জুন বিএনপির হরতাল চলাকালে সূত্রাপুর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন মোল্লা জানতে পারেন, সূত্রাপুরের কাপ্তান বাজারে যুবদল নেতা নূরে আলম সিদ্দিকীসহ ৮০ থেকে ৯০ জন জোর করে দোকানপাট বন্ধ ও রাস্তায় যানবাহন আটকে দিচ্ছেন।
খবর পেয়ে মনির হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁদের এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। তখন নূরে আলমসহ অন্যরা পুলিশের কাজে বাধা দেন বলে উল্লেখ করা হয় এজাহারে।
এতে আরও বলা হয়, বিষয়টি মনির হোসেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তখন আরও পুলিশ পাঠানো হয়। তারা কাপ্তানবাজারে এলে নূরে আলমসহ অন্যরা পুলিশের ওপর এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আহত হন পুলিশ কনস্টেবল বশির আহমেদ, মিজানুর রহমান ও রফিক।
পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় নূরে আলমসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে ২০১১ সালের ১৫ মে যুবদল নেতা নূরে আলমসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে দণ্ডবিধির ৩৫৩, ৩৩২, ১৮৬ ও ৩৪ ধারার অপরাধ করেছেন।
আইনজীবী ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মামলাটিতে ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এই মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত সাক্ষী ছিলেন ১২ জন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলার বাদীসহ (পুলিশ) তিনজন পুলিশ সদস্যকে সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করে। আদালত তাঁদের সাক্ষ্য নেন।