মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : ইসলামী ব্যাংক কক্সবাজারের টেকনাফ শাখায় জালিয়াতি করে গ্রাহকের টাকা উত্তোলনের অভিযোগে তিন জন কর্মকর্তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কারাগারে পাঠানো কর্মকর্তারা হলেন- টেকনাফের দক্ষিণ হ্নীলা জাদিমুড়ার দমদমিয়া এলাকার ঠান্ডা মিয়ার পুত্র ইমাম হোসেন, চট্টগ্রামের পটিয়ার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামের মীর আহমদের পুত্র আজিজ আহমেদ জাবেদ এবং পটিয়ার পানচুরিয়া চরকানাই শেখ পাড়ার আমিনুল হকের পুত্র মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম।
কারাগারে পাঠানো এসব কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
টেকনাফ থানার ওসি মোহাম্মদ ওসমান গণি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখার ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ আলতাফ হোসেনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে উল্লেখিত ৩ অফিসারকে ৫৪ ধারায় গত ১৫ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। যার এস.এল মামলা নম্বর : ১১/২০২৩ ইংরেজি।
তিনি আরো জানান, ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি দুদকের তপশিলভুক্ত অপরাধের ধারা হওয়ায় থানায় মামলা না করে অভিযোগটা দুদকের কক্সবাজার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মুনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, ৩ ব্যাংক অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি চেয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) দুদকের কক্সবাজারের জেলা কার্যালয় থেকে প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন সহ চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি প্রাপ্তি সাপেক্ষে মামলা দায়েরের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
ব্যাংক, পুলিশ ও দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ নভেম্বর ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখার এক গ্রাহক তাঁর হিসাবের স্থিতিতে গরমিল পাওয়ায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ আলতাফ হোসেনের কাছে মৌখিকভাবে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। পরে যাচাই-বাছাই করে এ অভিযোগের সত্যতা পান ব্যবস্থাপক।
একইভাবে ১২ নভেম্বর ব্যাংকের আরেক গ্রাহক তাঁর হিসাবের স্থিতির ব্যাপারেও একই অভিযোগ করেন। সেটিও ব্যবস্থাপক নিজ উদ্যোগে যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পান।হিসাব ২টির প্রাথমিক তদন্তে মোট ৫৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা গ্রাহকের হিসাব থেকে জালিয়াতি করে উত্তোলনের প্রমাণ পেয়েছেন ব্যবস্থাপক।
অন্যদিকে, কারাগারে পাঠানো জালিয়াতির মূলহোতা অভিযুক্ত ইমাম হোসেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে প্রদত্ত তাঁর লিখিত বক্তব্যে ৬৫ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর লিখিত বক্তব্য মতে, তিনি নিজে ৩০ লাখ টাকা, আজিজ আহমেদ জাবেদ ৩০ লাখ টাকা এবং মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম ৫ লাখ টাকা পারস্পরিক জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের হিসাব থেকে উত্তোলন করে ভাগবাটোয়ারা করেছেন।
তবে আজিজ আহমেদ জাবেদ ও মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।