দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জন্য একটি স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস গঠন করাসহ জাতীয় সংসদের প্রতি ১৬টি পরামর্শসংবলিত হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (১৯ নভেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের করা পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) আগামী ২৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ে ১৬ দফা পরামর্শ রয়েছে। এর বেশ কয়েকটি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও বিধিবহির্ভূত, যে কারণে দুদক দুটি লিভ টু আপিল করে। হাইকোর্টের সুপারিশসংবলিত রায় আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। সেই সঙ্গে লিভ টু আপিল দুটি ওই দিন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দুজনকে খালাসের রায় বহাল থাকবে কি না, তা লিভ টু আপিল নিষ্পত্তির মধ্যে জানা যাবে।’
মামলার নথিপত্র থেকে জানা যায়, ১৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগে ২০০৭ সালে তিতাস গ্যাসের অফিস ডেমরার তৎকালীন উপসহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান সরকার ও টেকনিশিয়ান আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এ মামলায় মো. কামরুজ্জামান সরকার ও আবদুর রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর জেল-জরিমানার রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে উভয়কে ৫ বছর করে কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
তাঁরা বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছর হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন। পৃথক আপিল মঞ্জুর করে তাঁদের দণ্ডাদেশ বাতিল করে হাইকোর্ট ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ওই রায় দেন।
৭৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি ৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। রায়ে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দুদকের জন্য একটি স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস গঠন করাসহ জাতীয় সংসদের প্রতি ১৬টি পরামর্শ দেওয়া হয়।
এই রায় স্থগিত চেয়ে দুদক পৃথক লিভ টু আপিল করে, যা রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ওঠে।