কারাগার বা অন্য কোনো আইনগত হেফাজতে আটক থাকলেও ভোট দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে এ ভোট দেওয়া যাবে। ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েদি এবং আইনগতভাবে আটক ব্যক্তি, প্রবাসীসহ অন্যদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের আবেদন করতে হবে।
ইসি জানায়, প্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যাদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে, এমন ব্যক্তিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের কোনো জেলখানায় বা অন্য কোনো আইনগত হেফাজতে আটক থাকলে, কোনো ব্যক্তি তিনি যে ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদানের অধিকারী সেই কেন্দ্র ব্যতীত অন্য কোনো ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত থাকলে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন।
এছাড়া বিদেশে বসবাসরত কোনো বাংলাদেশি ভোটারও নিতে পারবেন এই সুযোগ।
শারীরিকভাবে সরাসরি ভোটদানে অসমর্থ, এমন ভোটাররা আগে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে তা ডাকযোগে প্রেরণ করে ভোট দেবেন। এটিই মূলত পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি।
যেভাবে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়া যাবে
এক্ষেত্রে নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন করতে হবে। তিনি যে নির্বাচনী এলাকার ভোটার, সেই এলাকার রিটার্নিং অফিসারের নিকট পোস্টাল ব্যালটে ভোট প্রদানের উদ্দেশ্যে একটি ব্যালট পেপারের জন্য আবেদন করবেন এবং অনুরূপ প্রত্যেক আবেদনে ভোটারের নাম, ঠিকানা এবং ভোটার তালিকায় তার ক্রমিক নম্বর সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।
রিটার্নিং অফিসার কোনো ভোটারের আবেদন প্রাপ্তির পর, অনতিবিলম্বে ওই ভোটারের নিকট ডাকযোগে একটি পোস্টাল ব্যালট পেপার এবং একটি খাম পাঠাবেন, যে খামের ওপর তারিখ প্রদর্শনপূর্বক সার্টিফিকেট অব পোস্টিংয়ের একটি ফরম থাকবে, যা ভোটার কর্তৃক ডাকে প্রদানের সময় ডাকঘরের উপযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক পূরণ করা হবে।
কোনো ভোটার পোস্টাল ব্যালটে ভোট প্রদানের জন্য তার ব্যালট পেপার প্রাপ্তির পর, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তার ভোট রেকর্ড করার পর ব্যালট পেপারটি তার নিকট প্রেরিত খামে ন্যূনতম বিলম্বের মধ্যে রিটার্নিং অফিসারের নিকট ডাকযোগে পাঠাবেন।
রিটার্নিং অফিসার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাপ্ত ব্যালটের ফলাফল মূল ফলাফলের সঙ্গে যোগ করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করবেন। এ বিষয়ে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস/হাই কমিশনসমূহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবেন।
কয়েদি সংখ্যা
কারা অধিদপ্তরের সূত্র জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে কয়েদি আছে ২০ হাজারের মতো। এর মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবারের লকআপ অনুযায়ী কয়েদির সংখ্যা এক হাজার ১৭৩ জন।
এদিকে নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন ১৭ লাখের মতো ভোটার। আর প্রবাসে রয়েছে এক কোটির মতো ভোটার।
নির্বাচনের তফসিল
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।