সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লোহাগাড়া থানার সাবেক অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহজাহান পিপিএম (বার) নামে মিথ্যা, অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ পোস্ট ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগে হারুনুর রশিদ প্রকাশ বডি বিল্ডার হারুনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জহিরুল কবির সোমবার (২৭ নভেম্বর) এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত হারুনুর রশিদ প্রকাশ বডি বিল্ডার হারুন চট্রগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের মৃত সিদ্দিকী আহমেদের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিলেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর ৫৭(২) ধারায় লোহাগাড়া থানায় বিগত ৩০/০৮/২৩ ইং তারিখে আসামির বিরুদ্ধে লোহাগাড়া থানায় এজহার দায়ের করেন এসআই মোঃ জাকির সিকদার । বিগত ২৫/১১/২৩ ইংরেজী তারিখে আদালত চার্জ গঠন করে । মামলায় ৩১ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ২৮ জন স্বাক্ষী প্রদান করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহউদ্দিন বলেন, ২০১৭ সালে হারুন প্রকাশ বডি বিল্ডার হারুনসহ তার পরিচালিত বেশকিছু ফেসবুক আইডি থেকে লোহাগাড়া থানার সাবেক অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহজাহান পিপিএম(বার) এর নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন অশালীন কুরুচিপূর্ণ মানহানীকর লেখা ও ছবি পোস্ট শেয়ার ও কমেন্ট করার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৭ (২) ধারা ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আরও জানা গেছে, একই আদালত থেকে প্রধানমন্ত্রী সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোঃ জয়নুল আবেদীন, চট্টগ্রাম ১৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডক্টর আবু রেজা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নাদভী সহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মী, লোহাগাড়া থানা ও উপজেলার বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, অশ্লীল চরম মানহানিকর কুরুচিপূর্ণ পোস্ট স্ট্যাটাস ও বানোয়াট তথ্য ছড়িয়ে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে বডি বিল্ডার হারুনকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয় চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাইবার ট্রাইবুনাল আদালত।
একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকার অর্থদন্ড, অনাদায়ে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। বিগত ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ চট্রগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারায় অপরাধ সাব্যস্ত করে এ রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়াও রাজধানীর মতিঝিল থানার একটি প্রতারণার মামলায় ৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বডি বিল্ডার হারুন। এছাড়া প্রতারণা, দাঙ্গা, ডাকাতি, অবৈধ অস্ত্রবাজি, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আক্রমণ, জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, মাদক কেনাবেচাসহ বিভিন্ন অপরাধে হারুনের বিরুদ্ধে আরও বেশকিছু মামলা তদন্ত ও বিচারাধীন রয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে।
উল্লেখ্য, কখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, কখনো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), কখনো বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ’ কিংবা শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতো সরকারি দপ্তরের ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সর্দারনি পাড়ার যুবক হারুন অর রশিদ ওরফে বডিবিল্ডার্স হারুন। তার বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে অপরাধ ও প্রতারণার বেশকিছু লোমহর্ষক ঘটনা। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের তদন্তে তার ভয়াবহ প্রতারণার স্পর্শকাতর তথ্য উঠে এসেছে।