ঢাকার গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক এনু এবং তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের আরেক মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের ৫২ কোটি ৮৮ হাজার ৭৮৮ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরো ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা এ রায় ঘোষণা করেন।
অপরদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার বাকী ছয়জনকে খালাস প্রদান করেন আদালত। খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন— শহীদুল হক, মো. রশিদুল হক ভূঁইয়া, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান, মো. মেরাজুল হক শিপলু ও ভুলু চন্দ্র দেব। আসামিদের মধ্যে মেরাজুল হক শিপলু ও ভুলু চন্দ্র দেব পলাতক।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, যারা দুর্নীতিবাজ, মানিলন্ডারার তারা শুধু আমাদের সম্পদ চুরি করছে না। তারা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত চুরি করছে এবং আমাদের স্বপ্ন চুরি করছে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত তাদের আইনের আওতায় আনতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করা। এটা সত্য এদেশের মানুষ দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করে। তবে আমাদের উচিত তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করা।
২০১৯ সালে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসাসহ তাদের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের দুই সহযোগী আবুল কালাম ও হারুন অর রশিদের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এরপর তাদের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে সে সময় অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১২টি মামলা হয়।
এর মধ্যে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট বংশাল থানায় সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক মো. মেহেদী মাকসুদ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
এনু-রুপন বাদে চার্জশিটভুক্ত বাকি আসামিরা হলেন, শহীদুল হক, মো. রশিদুল হক ভুঁইয়া, মো. মেরাজুল হক শিপলু, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান ও ভুলু চন্দ্র দেব। আসামিদের মধ্যে এনু-রুপনসহ ৬ আসামি কারাগারে আছেন। অন্যদিকে, মামলার বিচারকালে ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি এনু ও রুপনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল ওয়ারী থানায় অর্থপাচারের মামলায় এনু-রুপনসহ ১১ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনের আদালত। একই সঙ্গে তাদের চার কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
দণ্ড পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন, জয় গোপাল সরকার, মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, রশিদুল হক ভূঁইয়া, সহিদুল হক ভূঁইয়া, পাভেল রহমান, তুহিন মুন্সি, আবুল কালাম আজাদ, নবীর হোসেন শিকদার ও সাইফুল ইসলাম।