অসহায় লোকদের খাইয়ে ও গাছের চারা রোপণ করে রাজধানীর আদাবর থানার মাদক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সেন্টু মিয়া নামের এক আসামি খালাস পেয়েছেন।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত আপিল নিষ্পত্তি করে রোববার (১০ ডিসেম্বর) খালাসের এই আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটির আপিল শুনানি চলাকালীন আদালত আসামিকে প্রবেশন দণ্ড হিসাবে ২০টি গাছ লাগানোসহ অসহায় মানুষদের খাওয়ানোর মৌখিক আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, আসামি ওই প্রবেশনের দণ্ড হিসেবে ২০টি গাছ লাগান ও অসহায় মানুষদের খাওয়ান। প্রবেশনের কাজগুলো প্রতিপালন করে আদালতকে অবহিত করলে আদালত তাকে এই মামলা থেকে খালাস দেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০০৭ সালের ১১ মার্চ রাত ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে আদাবর থানাধীন নবোদয় হাউজিং সোসাইটি এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসায়। সন্দেহ হওয়ায় একটি প্রাইভেটকার তল্লাশির জন্য থামায়। সেখানে দেখা যায়, ৫ জন মদ্যপ অবস্থায় হেলেদুলে গাড়ি চালাচ্ছে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। ওই ঘটনায় আদাবর থানার উপ-সহকারী পরিদর্শক রামকুমার দাস গাড়ির চালক নুর আলম ওরফে খাইরুল, সেন্টু, বাবর আলী, মোস্তফা ও লাল মিয়ার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। পরদিন তারা আদালত থেকে জামিন পান।
বিচার ও রায়
মামলাটি তদন্ত করে একই থানার উপ-পরিদর্শক রাজা মিঞা ওই বছরের ১৪ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছরের ৬ ডিসেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত সাতজন সাক্ষীর মধ্যে তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি ঢাকার তৎকালীন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তসরুজ্জামান আসামিদের এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড, এক হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেন। রায়ের সময় আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
পরে আসামি সেন্টু আত্মসমর্পণ করে আপিলের শর্তে জামিন চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। তাকে ২০টি গাছের চারা রোপণ, অসহায় লোকদের খাওয়ানোর মৌখিক আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশে সেন্টু তা প্রতিপালন করেন। এ সংক্রান্ত কিছু ছবি তিনি আদালতে দাখিলও করেন।