খোদ বিচারকই পাচ্ছেন না ন্যায়বিচার। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে প্রধান বিচারপতি চিঠি লিখে আত্মহত্যার আবেদন করলেন এক নারী বিচারক। সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশে ঘটেছে এমন মর্মান্তিক ঘটনা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম গুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর প্রদেশের বান্দা জেলার সিভিল আদালতের এক নারী বিচারক, যিনি ২০২২ সালে বারাবঁকি জেলায় নিযুক্ত ছিলেন। সেই সময় সেখানকার জেলা আদালতের এক বিচারক তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
একজন বিচারক হয়েও যদি ন্যায়বিচার না পাই, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে। এই প্রশ্নটা ওঠা স্বাভাবিক। যে বিচারক অন্যকে ন্যায়বিচার দেন, তিনি নিজে যখন বিচার পাচ্ছেন না, তখন সাধারণ মানুষের কী হবে?” তাই দয়া করে মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে আমার জীবন শেষ করার অনুমতি দেন। আমার জীবন শেষ হোক
এই বিষয়ে তিনি অবিলম্বে এলাহাবাদ হাইকোর্টে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। জেলা আদালতের ওই বিচারকের শাস্তির দাবি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, একজন বিচারক হয়েও তিনি ন্যায়বিচার পাননি। অভিযুক্ত বিচারকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ তো দূরের কথা, বিচার প্রক্রিয়াই এখনও শুরু হয়নি।
এর ফলে হতাশ হয়ে আর কোনও উপায় না দেখে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে উদ্দেশ্য করে খোলা চিঠি লিখে আত্মহত্যার আবেদন করেছেন তিনি।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘একজন বিচারক হয়েও যদি ন্যায়বিচার না পাই, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে। এই প্রশ্নটা ওঠা স্বাভাবিক। যে বিচারক অন্যকে ন্যায়বিচার দেন, তিনি নিজে যখন বিচার পাচ্ছেন না, তখন সাধারণ মানুষের কী হবে?” তাই দয়া করে মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে আমার জীবন শেষ করার অনুমতি দেন। আমার জীবন শেষ হোক।’
একজন জেলা জজ এবং তার সহযোগীদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগ করে তিনি লিখেছেন, ‘যৌন হয়রানির সর্বোচ্চ মাত্রার শিকার আমি হয়েছি। আমার সঙ্গে আবর্জনার মতো আচরণ করা হয়েছে। নিজেকে নর্দমার কীট মনে হচ্ছে।’
চিঠিতে তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি অভিযোগ জানানোর পর, সেই অভিযোগ গ্রহণ করতে করতেই ৬ মাস সময় লেগেছে। অথচ, এই প্রক্রিয়া ৩ মাসের মধ্যে শেষ করার কথা। তিনি এই নিয়ে একটি রিট পিটিশনও দাখিল করেছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টে। কিন্তু তা খারিজ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় বান্দা জেলা থেকে রোজ তাকে এলাহাবাদে যেতে হচ্ছে, মামলার তাগাদা দিতে।
চিঠিটি অনলাইনে ভাইরাল হলে এটি প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নজরে আসে। এরপরই ওই নারী বিচারকের অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্টের সচিবালয় থেকে এলাহাবাদ হাইকোর্টের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির কার্যক্রমের বর্তমান স্ট্যাটাস রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে।