কম্পিউটার গেম জিটিএ ৬-এর ট্রেলার ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার আগেই গেমের ৯০টি ক্লিপ চুরি করেছিলো এক তরুণ হ্যাকার। তাকে অদ্ভুত সাজা দিলো আদালত। সেটি হলো হাসপাতাল যাত্রা।
বছর ১৮ এর অরিণ কুর্তাজ একজন অটিস্টিক। কিন্তু সে যা কাণ্ড করে দেখিয়েছে তা দেখে সবাই রীতিমতো অবাক। ল্যাপসাস নামে এক কুখ্যাত সাইবার ক্রাইম গ্যাং-এর সঙ্গে যুক্ত এই যুবক। এই সাইবার ক্রাইম গ্যাং বিভিন্ন নামী সংস্থার লাখ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে ইতিমধ্যেই। সফটওয়্যার ফার্ম Nvidia এবং BT/EE হ্যাক করার অভিযোগও রয়েছে তার মাথার ওপর।
জিটিএ ৬-এর অপ্রকাশিত ক্লিপিং চুরির অভিযোগে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। কিন্তু হেফাজতে থাকাকালীন ওই যুবক নিজের শরীরের একাধিক চোট লাগিয়ে ফেলেছিল। অন্যদেরও কমবেশি জখম করে সে।
এদিকে অটিজমের সমস্যার কারণে তাকে আদালতে পেশ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই অভিযুক্তের বক্তব্য শুনতে পারছিলেন না বিচারক। তাই বিচারকের কাছে চিকিৎসকরা অনুরোধ করেন, কি অপরাধের অভিপ্রায় নিয়ে সে কাজ করেছিল সেটিও বিচারের আওতায় আনা দরকার।
শেষ পর্যন্ত বিচারক ওই অভিযুক্তকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিচারক এও জানিয়ে দেন, যতক্ষণ না চিকিৎসকরা বলবেন, ওই যুবক সমাজের জন্য নিরাপদ, ততক্ষণ তাকে হাসপাতালেই থাকতে হবে।
আরেকজন ল্যাপসাস সদস্য, যার বয়স ১৭ এবং আইনগত কারণে তার নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না, একই বিচারে তাকে দুটি প্রতারণা, দুটি কম্পিউটার অপব্যবহার আইনের অপরাধ এবং একটি ব্ল্যাকমেইলের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
সিটি অফ লন্ডন পুলিশের ডিসিএস আমান্ডা হর্সবার্গ বলেছেন: “এই মামলাটি অনলাইনে তরুণদের যে বিপদের দিকে টানতে পারে এবং এটি কারও বৃহত্তর ভবিষ্যতের জন্য যে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে তার একটি উদাহরণ হিসাবে কাজ করে। অনেক তরুণ-তরুণী প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে এবং কী কী দুর্বলতা বিদ্যমান তা অন্বেষণ করতে চায়। এর মধ্যে কোড শেখা, অনলাইনে সমমনা ব্যক্তিদের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করা এবং টুলস নিয়ে পরীক্ষা করা অন্তর্ভুক্ত।”
দুর্ভাগ্যবশত, ডিজিটাল বিশ্ব তরুণদের ভুল জিনিসের দিকে প্রলুব্ধ করতে পারে। আগস্ট ২০২০ এবং সেপ্টেম্বর ২০২২ এর মধ্যে ল্যাপসাস গ্যাংয়ের সাইবার আক্রমণগুলি একটি টেলিকম কোম্পানি, একটি কম্পিউটার যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারক, গেমিং কোম্পানি এবং অন্যান্যকে প্রভাবিত করেছিল।
জিটিএ ৬-এর প্রস্তুতকারক রকস্টার গেমস আদালতকে বলেছে যে, হ্যাক করার জন্য হাজার হাজার ঘণ্টা স্টাফের সময় ছাড়াও গেমটি পুনরুদ্ধার করতে ৫ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান