মামলাজট নিরসনের জন্য জেলায় জেলায় মেডিয়েশন সেন্টার স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি আহমেদ সোহেল। তিনি বলেছেন, মামলাজট নিরসনের জন্য মেডিয়েশনকে জনপ্রিয় করে তুলতে প্রতি জেলায় মেডিয়েশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। এছাড়া মেডিয়েশন বিষয়ে গবেষণা করার জন্য বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি।
রাজধানীর হোটেল পূর্বানীতে ‘মেডিয়েশন ও ইচ্ছাশক্তি’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিমস) এ কর্মশালার আয়োজন করেছে।
বিচারপতি সোহেল বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ৪০ লাখ মামলাজট বয়ে বেড়াচ্ছে। এই মামলাজট থেকে মুক্তির একমাত্র বিকল্প হতে পারে মেডিয়েশন। মেডিয়েশনবান্ধব সমাজ তৈরি করতে হলে অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটরদের যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রত্যেক মেডিয়েটরকে একেকজন লিডার হতে হবে। দ্রুত সময়ে মামলা বা বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য মেডিয়েশন সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। আরবিট্রেশন যেখানে ব্যর্থ মেডিয়েশন সেখানে সফল। আরবিট্রেশন পদ্ধতিতে মামলা নিষ্পত্তি করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। খরচও অনেক বেশি লাগে।
তিনি বলেন, একমাত্র মেডিয়েশন পদ্ধতি প্রয়োগ করে কম খরচে অল্প সময়ে বিরোধ বা মামলা নিষ্পত্তি সম্ভব। মামলাজট থেকে মুক্তির পথ হচ্ছে মেডিয়েশন। এ কারণে মেডিয়েশনের সৌন্দর্য সবার সামনে তুলে ধরতে হবে। সাধারণ মানুষ মেডিয়েশনের সৌন্দর্য বুঝতে পারলে তারা মেডিয়েশনের মাধ্যমে বিরোধ বা মামলা নিষ্পত্তি করতে উদ্বুদ্ধ হবে।
এই বিচারপতি বলেন, এখন সময় এসেছে আইনজীবীদের মেডিয়েশনকে পেশা হিসেবে নেওয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে উচ্চ শিক্ষায় মেডিয়েশনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্বাগত বক্তব্যে বিমসের চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এন গোস্বামী বলেন, মেডিয়েশন সফল করতে হলে অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটরদের ইচ্ছাশক্তিকে জাগ্রত করতে হবে। স্বভাব নির্মল করতে হবে, মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে; মনে রাখতে হবে- যে রকম অন্ধকারে আলো উজ্জ্বল হয়, ঠিক তেমনি সত্য সব সময় উজ্জ্বল হয়। মানুষকে বিরোধমুক্ত রাখতে হলে একজন মেডিয়েটরকে সব সময় ভূমিকা রাখতে হবে।
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, নেপাল সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট হরি শংকর নিউল্যা ও বিমসের ইন্টারন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর বিজয় ভারতীয়াসহ অনেকে। কর্মশালায় ৪১ জন অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটর অংশগ্রহণ করেছেন।