“গ্রাম আদালত (সংশোধন) বিল, ২০২৪” নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে বিলটি গ্রহণ করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদে রোববার (৩১ মার্চ) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১ম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম এমপি এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আবদুল ওয়াদুদ এমপি, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ এমপি, মো. ছানোয়ার হোসেন এমপি, মো. মতিয়ার রহমান এমপি, মো. ইকবাল হোসেন এমপি, মোহাম্মদ আলী এমপি এবং ফরিদা খানম এমপি উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বৈঠক শুরু করা হয়। বৈঠকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবসহ শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লক্ষ শহীদ, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে তাঁদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১ম বৈঠক হওয়ায় উপস্থিত সদস্যগণের পরিচিতি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ‘স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন দপ্তর, অধিদপ্তর ও সংস্থাসমূহের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
বৈঠকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সমবায় অধিদপ্তর, বার্ড, বিআরডিবি, আরডিএর মহাপরিচালক, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গ্রাম আদালত বিল
কোনো অস্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা তার মূল্য আদায়ের মামলা, স্থাবর সম্পত্তি বেদখল হওয়ার এক বছরের মধ্যে তার দখল পুনরুদ্ধারের মামলা, কোনো অস্থাবর সম্পত্তির জবর দখল বা ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবে গ্রাম আদালত।
এমন সব বিধান রেখে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত গ্রাম আদালত (সংশোধন) বিলের রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছে সংসদীয় কমিটি। সংশোধিত বিলে গ্রাম আদালতের জরিমানার সীমা ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, একজন চেয়ারম্যান এবং উভয়পক্ষ মনোনীত দুজন করে মোট পাঁচজন সদস্য নিয়ে গ্রাম আদালত গঠন করা হবে। প্রত্যেক পক্ষের মনোনীত দুজন সদস্যের মধ্যে একজন সদস্যকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হতে হবে।
ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলার সঙ্গে কোনো নারীর স্বার্থ জড়িত থাকলে সংশ্লিষ্ট পক্ষ সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে একজন নারীকে সদস্য হিসাবে মনোনয়ন দেবে। চারজন সদস্যের উপস্থিতিতে গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত দুই-দুই ভোটে অমীমাংসিত হলে চেয়ারম্যান নির্ণায়ক ভোট দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
বিলের তফশিলে সাত ধরনের দেওয়ানি মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো- কোনো চুক্তি রশিদ বা অন্য কোনো দলিল মূল্যে প্রাপ্য অর্থ আদায়। কোনো অস্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা তার মূল্য আদায়ের মামলা। স্থাবর সম্পত্তি বেদখল হওয়ার একবছরের মধ্যে তার দখল পুনরুদ্ধারের মামলা। কোনো অস্থাবর সম্পত্তির জবর দখল বা ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা। গবাদি পশু অনাধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণের মামলা। কৃষিশ্রমিকদের পরিশোধ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা এবং স্বামীর বিরুদ্ধে কোনো স্ত্রীর বকেয়া ভরণপোষণ আদায়ের মামলা। এসব বিষয় গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তিযোগ্য হবে।