বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সব রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তির’ কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে বুয়েটে এখন থেকে ছাত্ররাজনীতি করায় আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (১ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর বুয়েট কর্তৃপক্ষের দেওয়া ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তির’ বৈধতা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন আজই রিটটি করেন। ইমতিয়াজ বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম হারুনুর রশীদ খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
হাইকোর্টের আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত রুল দিয়ে জরুরি বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করে দিয়েছেন। এর ফলে বুয়েটে এখন থেকে ছাত্ররাজনীতি করায় আর কোনো বাধা থাকল না।’
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে শেরেবাংলা হলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা মামলায় আদালত ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
গত ২৭ মার্চ মধ্যরাতের পর ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম চালান, এমনটি উল্লেখ করে ২৯ মার্চ আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাঁরা টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ২৭ মার্চ মধ্যরাতের পর ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ইমতিয়াজ।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েটের হল থেকে ইমতিয়াজের সিট (আসন) বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের মধ্যে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবিতে গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়টি একটি কালো আইন। এই আইন সংবিধানবিরোধী।