সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল থেকে নির্বাচিত সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মনজুরুল হকের হাতে-হাত রেখে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের (নীল প্যানেল) মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে এসময় বিএনপি প্যানেল থেকে নির্বাচিত অপর ৩ জন উপস্থিত ছিলেন না।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচনের (২০২৪-২৫) আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এরপর নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দেন মাহবুব উদ্দিন খোকন।
এর আগে বিদায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সদ্য নির্বাচিত সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হকসহ নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের ফুলের তোড়া দিয়ে গ্রহণ করতে দেখা যায়।
একপর্যায়ে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও শাহ মনজুরুল হক তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে একসাথে দুজন হাতে-হাত রেখে আজকের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। এসময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এবারের ঘটনাবহুল নির্বাচনে কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪ পদের মধ্যে সভাপতি, সদস্যের ৩টি পদসহ ৪টি পদে নীল প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে সহসভাপতির ২টি পদ, সম্পাদক ১টি, কোষাধ্যক্ষ ১টি, সহসম্পাদকের ২টি পদ, সদস্যের ৪টিসহ ১০টি পদে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের (সাদা প্যানেল) প্রার্থীরা।
একপর্যায়ে বিএনপির প্যানেল থেকে বিজয়ী সভাপতি ব্যারিস্টার খোকনসহ চারজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে চিঠি দেয় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তবে নির্বাচিত সভাপতি আজ মতবিনিময় সভা করে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দায়িত্ব গ্রহণের আগে ‘জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য সমর্থিত ও সমমনা আইনজীবীদের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের মতবিনিময় সভা’—এমন ব্যানারে আজ দুপুরে সমিতির দক্ষিণ হলরুমে সভা হয়।
সভায় ঘটনার বর্ণনা করে বক্তব্য দেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মতামত চাই, আমি কি আজকের এই দায়িত্বভার গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাব কি যাব না?’ তখন উপস্থিত আইনজীবীরা অনুষ্ঠানে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। পরে তিনি বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগ দেন।
বিএনপি–সমর্থিত প্যানেল থেকে সভাপতি পদে মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং সদস্যপদে নির্বাচিত তিনজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে গত ২৭ মার্চ চিঠি দেয় বিএনপির আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি। চিঠির বিষয়ে সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোট গণনা হলে সভাপতিসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ পদ আমরা পেতাম। নির্বাচনের পরও পুনর্নির্বাচন চেয়েছি, সভাপতি পদসহ। আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা হবে। পুনর্নির্বাচন দিলে স্বাগত জানাব ও নির্বাচনে অংশ নেব। আর পুনর্নির্বাচন না দিলে এখানে শপথের কিছু নেই। পদত্যাগের কিছু নেই। ফলাফল ঘোষণা করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পদে থাকব।’