বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতির সিদ্ধান্তের আইনগত কার্যকারিতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ব্যারিস্টার খোকন বলেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ছিল টিএইচ খানের মতো আইনজীবীদের নেতৃত্বে। সেই সংগঠনকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম করে কায়সার কামাল। এই সংগঠনের কোনো গঠনতন্ত্র নাই। যদি গঠনতন্ত্র না থাকে তাহলে কীভাবে আমাকে অব্যাহতি দেয়। এই অব্যাহতির সিদ্ধান্ত আইনগত কার্যকারিতা নাই।
আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট বারে এক সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনে বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালের ভূমিকা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বার সভাপতি এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
এ দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা বার নির্বাচনে অংশ নেই। সেই নির্বাচনে আমরা ১৪টি পদের মধ্যে ১২টিতে জয়ী হতাম। কিন্তু কায়সার কামাল তিনবার সরকারের প্যানেলের পক্ষে কাজ করায় আমরা সভাপতিসহ চারটি পদে জয়ী হয়েছি। নির্বাচনের পর ভোট গণনা থেকে আমাদের এজেন্টদের কেন সরিয়ে নেওয়া হলো। এজেন্টদের সরিয়ে নেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগকে ওয়াকওভার দেওয়া। অর্থাৎ বার নির্বাচনে সরকারকে জেতানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেছেন কায়সার কামাল। এই ষড়যন্ত্রের মূলে ছিল ভোট গণনার সময় এজেন্টদের সরিয়ে নেয়া। যদি এজেন্টদের সরিয়ে নেয়া না হত তাহলে আমরা ১২ পদে জয়ী হতাম।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে সংবাদ সম্মেলন করে এই বক্তব্য দেন বার সভাপতি এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে বার সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ায় ব্যারিস্টার খোকনকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই ফোরামের মহাসচিব পদে রয়েছেন কায়সার কামাল।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, তারেক রহমান আমাদের প্যানেল ঘোষণা করেছেন। বিএনপির পার্টি অফিসে সবার উপস্থিতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। তারেক রহমান তো বলেনি তোমরা ভোট গণনায় যেও না, সভাপতির দায়িত্ব নিও না। তাহলে দায়িত্ব নিও না— একথা বলার কায়সার কামাল কে?
যদি আমরা ১২ পদে জয়ী হতাম তাহলে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের আন্দোলন শক্তিশালী করতে পারতাম। কার সঙ্গে আতাঁত করে কায়সার কামাল সরকারকে পূর্ণ প্যানেলে জয়ী করার পেছনে কাজ করছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে ওয়াকওভার দেওয়া।
তিনি বলেন, বার নির্বাচনে আমরা সরকারের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু কায়সার কামালের ষড়যন্ত্রের কারণে সেই যুদ্ধে পুরোপুরি জয়ী হতে পারিনি। তিনি নির্বাচনের সময় উপস্থিত না থেকে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। তারেক রহমানের ঘোষিত প্যানেলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
কায়সার কামালকে অর্বাচীন বালক হিসেবে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, তিনি একজন আত্মস্বীকৃত অপরাধী। সে কীভাবে আইনজীবীদের নেতা হন। নৈতিক স্থলনের কারণে আইনজীবী ফোরাম থেকে তার সদস্যপদ থাকা উচিত নয়। সরকারের এই এজেন্টকে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত। আমি মনে করি কায়সার কামালের ভূমিকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের তদন্ত করা উচিত।
তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় কায়সার কামালদের ভূমিকা কী ছিল? কোথায় ছিলেন তিনি ওই সময়।