পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সম্পদের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে। ওই রিটে ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ ও ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোট’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গতকাল রোববার (২১ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন রিগ্যান আবেদনকারী হিসেবে এই রিট করেন। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে এর শুনানি হবে বলে জানা গেছে।
রিট দায়েরের বিষয়টি জানিয়ে আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রকাশিত ওই সংবাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চেয়ে ৪ এপ্রিল দুদকের কাছে আবেদন করা হয়। এতে ফল না পেয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ১৮ এপ্রিল দুদক বরাবর আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এর কোনো জবাব না পেয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে।
সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘বলছি না বেনজীর আহমেদ অবৈধভাবে বা দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেছেন বা করেননি। তবে প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অনুসন্ধান হওয়া উচিত। কারণ, প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জনগণ মনে করেন, পুলিশের সাবেক আইজিপি অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদক অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিলে এই বিষয়ে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত হবে। আইন দুদককে স্বেচ্ছায় অনুসন্ধানের ক্ষমতা দিয়েছে। চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।’
এরই মধ্যে রিটের একটি কপি হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। সেখানে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে দুদক চেয়ারম্যান ও সচিবসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, তারা রিটের একটি কপি হাতে পেয়েছেন। সেখানে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে দুদক চেয়ারম্যান, সচিবসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে।
বেনজীরের দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চেয়ে দুদকে আবেদন
এর আগে গতকাল রোববার বেনজীরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চেয়ে দুদকে আবেদন করেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও কন্যাদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তার আয়ের তুলনায় অসম। লিখিত ওই আবেদনে সাবেক আইজিপির দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চান সুমন। পাশাপাশি দুদক কোনো ব্যবস্থা না নিলে, উচ্চ আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।
গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে রিপোর্ট প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। দুইদিন পর ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে আরেকটি রিপোর্ট প্রকাশ হয় একই দৈনিকে। সাবেক আইজিপিকে নিয়ে এমন খবর নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হলেও নিশ্চুপ ছিল দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকসহ সংশ্লিষ্টরা।