আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, দক্ষ বিচার বিভাগ গঠনে দেশে একটি শক্তিশালী ও বিশ্বমানের জুডিসিয়াল অ্যাকাডেমি প্রয়োজন। ভূমি অধিগ্রহণ শেষ করে আগামী নভেম্বর নাগাদ এই অ্যাকাডেমির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করবো।
সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) ২০২৪-২৫ এর খসড়া চূড়ান্তকরণ বিষয়ক কর্মশালায় বুধবার (২৪ এপ্রিল) তিনি এ সব কথা বলেন। আইন ও বিচার বিভাগের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন। বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার এতে সভাপতিত্ব করেন।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা ভাষায় একটি কথা প্রচলিত আছে ‘‘কোমর বেঁধে লেগে যাবা’’। বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কোমর বেঁধে লেগে যেতে হবে। এখন থেকে এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে সভা হবে প্রতি তিন মাস পরপর।’
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে লিগ্যাল এইড (আইনি সেবা) দেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও এর থেকে বেশি পরিমাণ সেবা প্রদানের পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘লিগ্যাল এইড বাড়াতে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নিয়ে নিয়মিত সভা করতে হবে। এই সভা নিয়মিত সম্ভব হলে সরকারের লিগ্যাল এইড কার্যক্রম অধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পরিচিতি পাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই কার্যক্রম মানুষের কাছে পরিচিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ লিগ্যাল এইড নিতে আসবে না।’
মামলাজট নিরসনে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল, জনগণ যাতে দ্রুত ন্যায়বিচার পায়। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য জনগণকে যাতে দীর্ঘকাল অপেক্ষা করতে না হয়। বঙ্গবন্ধুর এই দর্শন প্রতিফলিত হয়েছে বাংলাদেশের সংবিধানে। সেখানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে এবং জনগণ যাতে দ্রুত বিচার পায় সে জন্য একটি দক্ষ, বলিষ্ঠ ও শক্তিশালী বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দুঃখের বিষয়, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘকাল বিচার বিভাগের কোনও উন্নয়ন হয়নি, সংবিধান মেনে চলা হয়নি। এ রকম বিভিন্ন কারণে মামলাজট দিনের পর দিন বেড়েছে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর প্রথমেই বিচার বিভাগের ভৌত অবকাঠামো নিমার্ণের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর অংশ হিসেবেই প্রতিটি জেলায় অত্যাধুনিক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বৃদ্ধি করা হচ্ছে বিচার বিভাগের কলেবর।’