ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহে যে স্থানে হত্যা সংঘটিত হয়েছে সে স্থানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ২৭ জানুয়ারি ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে কেন স্বীকৃতি দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার (২ জুন) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা বাবু।
এর আগে ২৭ জানুয়ারি ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিনসহ সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন আইনজীবী জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।
রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক এবং রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘সলঙ্গা গণহত্যা দিবস’কে জাতীয় দিবসের স্বীকৃতি দিতে আইনি নোটিশ
উল্লেখ্য, ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি তদানীন্তন ব্রিটিশ সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ বাহিনীর গুলিতে রায়গঞ্জ থানার সলঙ্গা হাটে বিলেতি পণ্য বর্জন-আন্দোলনের কর্মীসহ সাধারণ হাটুরে জনতা শহীদ হন। ব্রিটিশ শাসন আমলে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনে জনতা উদ্বেলিত হয়ে বিলেতি পণ্য বর্জন করে স্বদেশি পণ্য ব্যবহারের সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। এ আন্দোলনের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে সলঙ্গায়।
সে সময় তৎকালীন পাবনা জেলার এবং বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গায় একটি ব্যবসায়িক জনপথ হিসেবে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসত। ১৯২২ সালে ২৭ জানুয়ারি শুক্রবার ছিল বড় হাটবার। মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশেষ নেতৃত্বে অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের কর্মীরা হাটে বিলেতি পণ্য কেনা-বেচা বন্ধ করে দেন।
স্বদেশি আন্দোলনের কর্মীদের রুখতে ছুটে আসে পাবনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আরএন দাস, জেলা পুলিশ সুপার ও সিরাজগঞ্জ মহুকুমা প্রশাসক এসকে সিনহাসহ ৪০ জন সশস্ত্র লাল পাগড়ীওয়ালা পুলিশ। সলঙ্গার গো হাটায় ছিল বিপল্লী স্বদেশী কর্মীদের অফিস। পুলিশ কংগ্রেস অফিস ঘেরাও করে গ্রেফতার করে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুর রশীদকে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে মুক্ত করতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।