সত্য এখন মিথ্যাচারের শিকার! মজা করা হয় বিচারপতিদের নিয়েও
ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড়

আইন পেশায় এখনও সমস্যা অনেক: ভারতের প্রধান বিচারপতি

বলিউডের ‘জলি এলএলবি’ ছবিতে হাসির মোড়কে তুলে ধরা হয়েছিল বিচার ব্যবস্থার অনেক ত্রুটিকে। সে কথা উল্লেখ করে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বললেন, অনেক সমস্যা এখনও রয়েছে। তার সমাধান প্রয়োজন।

কলকাতা হাইকোর্টের বার লাইব্রেরি ক্লাবের দ্বিশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে শুক্রবার (২৮ জুন) এমনই কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরলেন প্রধান বিচারপতি।

তাঁর মতে, আইনি পেশায় মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে আরও পদক্ষেপ প্রয়োজন। মহিলারা একই সঙ্গে অনেক ভূমিকা পালন করেন। গৃহস্থালি সামলে পেশাগত দায়িত্ব সামলান। তাই তাঁদের জন্য কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সুযোগসুবিধে থাকা প্রয়োজন।

এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের কর্মীদের জন্য চালু করা মধ্যাহ্নভোজের কথা বললেন তিনি। স্মরণ করলেন শীর্ষ আদালতের এক মহিলা কর্মীর কথা। সেই কর্মী জানিয়েছিলেন, অনেক মহিলা কর্মীই নিজেদের জন্য রান্না করার সুযোগ পান না। তাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছেন।

প্রধান বিচারপতির মতে, পেশায় মহিলাদের উপস্থিতি বাড়ছে। তা নিম্ন আদালতেও স্পষ্ট। উল্লেখ করলেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির অন্তত এক-তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ করতে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চের নির্দেশের কথাও। পাশাপাশি আইনজীবীদের মধ্যে পেশাদারিত্বের অভাবের কথাও উল্লেখ করেছেন প্রধান বিচারপতি।

তাঁর মতে, তরুণ আইনজীবীদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রবীণ আইনজীবীদের তরফে অভিভাবকত্বের প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে কলকাতা হাই কোর্ট বার লাইব্রেরির মতো সংস্থা বড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মত তাঁর। সেই সঙ্গে প্রয়োজন প্রবীণ আইনজীবীদের সঙ্গে কর্মরত তরুণ আইনজীবীদের উপযুক্ত পারিশ্রমিকের।

তাঁর মতে, সমাজের প্রান্তিক অংশ থেকে আসা তরুণ আইনজীবীদের অনেকেই আইন ব্যবসা ছেড়ে যোগ দেন চাকরিতে। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের চালু করা ল ক্লার্ক পরীক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। ২২ কেন্দ্রে নেওয়া পরীক্ষার মাধ্যমে ৮ হাজার তরুণ আইনজীবী ল ক্লার্ক পদে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

বিচার ব্যবস্থায় প্রযুক্তির ব্যবহারের পক্ষে বরাবরই সওয়াল করেছেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর মতে, ভিডিয়ো কনফারেন্সিং ব্যবস্থা তথা ‘হাইব্রিড মোডে’ আদালত চলায় ভৌগোলিক দূরত্বে থেকেও কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বাংলা-সহ নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের কয়েক হাজার রায়।