দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে নিয়োগ দিয়েছেন।
আজ শনিবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় তাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। বঙ্গভবন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ শপথের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
প্রাথমিক জীবন
সৈয়দ রেফাত আহমেদ ২৮ ডিসেম্বর ১৯৫৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সাবেক দুটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা খ্যাতনামা আইনবিদ প্রয়াত ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের পুত্র। তাঁর মাতা সুফিয়া আহমেদ জাতীয় অধ্যাপক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক ছিলেন।
রেফাত আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৮৩ সালে তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়াদাম কলেজে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ফ্লেচার স্কুল অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি অব টাফ্টস ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স এবং পিএইচডি সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবন
সৈয়দ রেফাত আহমেদ ১৯৮৪ সালে ঢাকা জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন। তিনি ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন।
তিনি হংকং এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি ২৭ এপ্রিল ২০০৩ সালে বাংলাদেশ হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন।
২৭ এপ্রিল ২০০৫ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আজ তাঁরা আইন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা।
প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্য পাঁচ বিচারপতি হলেন- এম ইনায়েতুর রহিম, মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. শাহিনুর ইসলাম ও কাশেফা হোসেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম পদত্যাগ করেননি।
নিয়ম অনুযায়ী আইন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্রগুলো প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন।
এর আগে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।
বেলা দেড়টার দিকে জানা যায়, প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরপর বেলা দুইটার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান।
এদিকে সৈয়দ রিফাত আহমেদকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।