সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হককে দেশের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে আদেশ জারির পর এরইমধ্যে তিনি যোগদানও করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকারের দমন-পীড়নের বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন খ্যাতনামা আইনজীবী অনীক আর হক। আন্দোলনকারী ছাত্রদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে রিটকারীদের আইনজীবীও ছিলেন জনস্বার্থ সংক্রান্ত ইস্যুতে সবসময় সোচ্চার থাকা অনীক আর হক।
আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তি দিতে ও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলি না চালাতে নির্দেশনা চেয়ে এই রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।
আরও পড়ুন: অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের ৭০ আইন কর্মকর্তার পদত্যাগ
প্রবল গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে ৫ আগস্ট পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করার সুযোগ আছে বলেও সম্প্রতি মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
তিনি বলেছেন, দেশের শত শত শিক্ষার্থী ও জনতাকে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার করার সুযোগ রয়েছে।
অনীক আর হক আরও বলেছিলেন, শেখ হাসিনার বিচার শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই নয়, তিনি ও তার সহযোগীরা যেসব গণহত্যার অপরাধ করেছেন উচ্চ আদালতেও তাদের বিচার করা সম্ভব।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে অনীক আর হক বরাবরই জনস্বার্থ সংক্রান্ত ইস্যুগুলোতে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেন। ঢাকার বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনি উচ্ছেদ অভিযানের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে গত ১১ জুলাই আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, সেটিতেও আইনজীবী ছিলেন তিনি।
ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করার পর অনীক আর হক ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন। পরে তিনি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ উলভারহ্যাম্পটন থেকে আইনবিদ্যার ওপর স্নাতক শেষ করার পর গ্রেস ইন থেকে বার-অ্যাট-ল সম্পন্ন করেন।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে গত ৮ আগস্ট অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর পদত্যাগ করেন। তারপর আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরীসহ অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলসহ অন্তত ৭০ আইন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।
ওইদিনই দেশের ১৭তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তবে নিয়োগের আগেই তিনি বিএনপির ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। নিয়োগের দিনই অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব নেন।