গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের প্রায় ২৫ কোটি আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এখনো জানেন না। এছাড়াও ড. ইউনূস মামলাটি আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করে। গত রোববার (১১ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি জানার পর সোমবার (১২ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে এনিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, ‘মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে গ্রামীণ টেলিকমের কেউ কিছু জানেন না। গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষ থেকে বক্তব্য হলো, এ ব্যক্তিদের [আসামিদের] বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে তাদের চোর, অর্থ আত্মসাৎকারী, পাচারকারী বলে সারা পৃথিবীতে, দেশের মানুষের কাছে অপমানিত ও সম্মানহানি করা হলো। আর এখন রাতারাতি মামলাটি প্রত্যাহার করে নিলেন।’
আরও পড়ুন: অর্থ আত্মসাৎ মামলায় ড. ইউনূসসহ ১৪ জন খালাস
আইনজীবী মামুন বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি বলেছেন, এখনো বলছেন, প্রতিটি মামলা আইনি পদ্ধতি অনুযায়ী চলবে। প্রতিটি মামলা তিনি আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন।’
‘তাই গতকাল (১১ আগস্ট) যে বিষয়টি [মামলা প্রত্যাহার] হয়েছে, তা অমরা অবগত নই, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জানি না,’ তিনি আরও বলেন।
এর আগে রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশ তহবিল থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনকে খালাস দেন।
বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল ইসলাম মামলার প্রসিকিউশন প্রত্যাহারের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদন গ্রহণ করে এ আদেশ দেন।
মামলার অন্য ১৩ আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক আশরাফুল হাসান, নাজনীন সুলতানা, পারভীন মাহমুদ, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও অধ্যাপক হুজ্জাতুল ইসলাম লতিফী; গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, আইনজীবী জাফরুল হাসান শরীফ ও ইউসুফ আলী, প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম; এবং জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান।
২০২৩ সালের ৩০ মে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করে দুদক। দুদকের উপ-পরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার ২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মামলার চার্জশিট দাখিল করেন।