চট্টগ্রামের সবগুলো আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে আসামিদের জন্য রাখা লোহার খাঁচা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই আসামিদের আর খাঁচার মধ্যে দাঁড়াতে হবে না।
আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচাগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিএমএম আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, আগে লোহার খাঁচা ছিল। আসামিরা সেখানেই দাঁড়াতেন। এখন থেকে আর খাঁচায় কাউকে দাঁড়াতে হবে না। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে খাঁচাগুলো সরানো হয়েছে। এখন বাদী ও সাক্ষীর ডকের সঙ্গে আসামিদের রাখা ডকের আর কোন পার্থক্য নেই।
আদালত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শুধু সিএমএম আদালত নয়, সিজেএম, মহানগর দায়রা জজ, জেলা ও দায়রা জজ আদালতসহ চট্টগ্রামের সবগুলো আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে আসামিদের জন্য রাখা লোহার খাঁচা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। খাঁচার মতো দেখতে লোহার গ্রিলগুলো বের করে ফেলা হয়েছে। রয়েছে শুধু বুক পরিমাণ সমান একটি গ্রিল। বাকি অংশ খোলা অবস্থায় রয়েছে।
আইনজীবীরা বলছেন, লোহার খাঁচার মধ্যে আসামি রাখা অমানবিক ও সংবিধান পরিপন্থি। সভ্য দেশে লোহার খাঁচা থাকতে পারে না। সংবিধানে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক দণ্ড দেওয়া যাবে না কিংবা কারও সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করা যাবে না।
দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসও আদালতের এজলাস কক্ষে আসামিদের জন্য রাখা লোহার খাঁচার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আসামিদের লোহার খাঁচায় রাখা অবশ্যই অমানবিক ও সংবিধান পরিপন্থি। মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছিল খাঁচাগুলো। এখন খাঁচাগুলো সরিয়ে নেওয়াতে ভালো হয়েছে। আসামিকে কেন্দ্র করে সব রকম অমানবিক, যন্ত্রণাদায়ক ব্যবস্থার অবসান হওয়া প্রয়োজন।