ডিজিটাল মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য প্রচার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন মো. সোহাগ মল্লিক নামের একজন বাদী হয়ে পলকের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন। পরে আদালত মামলা গ্রহণের মতো উপাদান না থাকায় তা খারিজ করে দেন।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী জুয়েল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ১৭ জুলাই রাত থেকে সারাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট ও ১৮ জুলাই থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। এতে টানা ৫ দিন সব ধরনের ইন্টারনেট বন্ধ থাকে। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ১৩ দিন বন্ধ থাকে। ১৮ জুলাই আসামি জানান পরিস্থিতির প্রয়োজনীয়তায় ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলে রিটের শুনানি রোববার
পরবর্তীতে তিনি ডাটা সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডের কথা বলে নেট বন্ধ হয়েছে বলে জানান। গত ১৩ আগস্ট দেশব্যাপী মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট শাটডাউনের কারণ এবং সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বর্তমান উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের নির্দেশক্রমে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
গঠিত কমিটি যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করে তা অনুযায়ী, বিগত ১৫-১৬ জুলাই ২০২৪ সময়কালে মোবাইল ইন্টারনেট এবং গত ১৮ জুলাই ২০২৪ হতে ২৩ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত ও ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ব্যতিরেকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক মৌখিক নির্দেশক্রমে এর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এর নির্দেশনায় সম্পন্ন করা হয়।
অপরদিকে, গত ১৭ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত এবং ৫ আগস্ট মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ও চালু করার বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) এর নির্দেশনায় সম্পন্ন করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায় যে, বর্ণিত সময়ে ডাটা সেন্টারে আগুন লাগার সাথে ইন্টারনেট বন্ধের কোন সম্পর্ক ছিল না। ইন্টারনেট বন্ধের সাথে ডাটা সেন্টারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি সম্পৃক্ত করে প্রচারণার মাধ্যমে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জাতির সাথে মিথ্যাচার ও প্রতারণা করেছেন।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামি সাবেক সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী হইয়াও বিভিন্ন ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে ইন্টারনেট সংক্রান্ত বন্ধ মিথ্যা, বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালায় যায় ফলশ্রুতিতে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। আসামি ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণের মধ্যে ভয়ভীতি সঞ্চার করিবার অভিপ্রায়ে তাদের ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে বৈধ প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। যার ফলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিপন্ন হয়।