গুম ও অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের জীবিত ফেরত এবং নির্যাতনের বিচার পেতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগীদের স্বজনরা।
বুধবার (২৮ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্কতা মো. শফিকুল ইসলাম ভুক্তভোগীদের স্বজনদের এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
এক ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য মো. বিল্লাল হোসেনের সই করা স্মারকলিপিতে বলা হয়, স্বজনহারা পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেও কোনো সুফল পায়নি। গুম ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, তুফান, প্রশাসনিক বাধা উপেক্ষা করে, জীবনের মায়া ত্যাগ করে দীর্ঘদিন ধরে গুম ও অপহরণ ব্যক্তিকে খুঁজে পেতে আন্দোলন করে আসছেন।
এরই মধ্যে গোপন ডিটেনশন সেল থেকে অনেকেই মুক্তি পেয়েছেন। আমরা আমাদের ভাইদের সম্পর্কে জানতে চাই। তারা কোথায় এবং কেমন আছেন? তাদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এছাড়াও আমরা নিশ্চিত করবো যে সব অপরাধীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, সত্য উন্মোচন করা হচ্ছে এবং তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রতিটি পরিবার অনেক অসহায়, তাই আপনার সাহায্য ও সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
স্মারকলিপিতে আটটি দাবি তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো-
১. আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুম, খুন, অপহরণের বিচারের ব্যবস্থা করা।
২. আয়নাঘরের তালিকা ও স্বজনহারা পরিবারকে দেখার সুযোগ করে দিতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া।
৩. গুম হওয়া কোনো ব্যক্তির সন্ধান যদি না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে সরকারের এমন একটি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ওই পরিবারের সন্তানদের পড়াশোনা ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা।
৪. আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে মামলা পরিচালনার জন্য সরকারি সহায়তা।
৫. ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যায়ভাবে যেসব মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে সেগুলোর ন্যায়বিচারের ব্যবস্থা করা।
৬. আওয়ামী লীগের আমলে অনেকের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি, তাদের নামে মামলা করা।
৭. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশ দিতে হবে যেন ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা করতে পারেন। এবং
৮. নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যবস্থা নেওয়া।
স্মারকলিপিতে প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে বলা হয়, আর্থিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত, সরকারিভাবে মামলা পরিচালনা করার জন্য আপনার সহযোগিতা প্রয়োজন। এ ছাড়া অনেক মামলায় অন্যায়ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাদের বিপক্ষে চার্জশিট দিয়েছে যা ন্যায়বিচার থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি, সে ব্যাপারে আপনার সহযোগিতা প্রয়োজন। পাশাপাশি স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় অনেকের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি, তাদের নামে মামলা করতে চাই। এ ছাড়া প্রতিটি নিখোঁজ পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য আপনার সহযোগিতা একান্ত কাম্য।