শিশু পর্নোগ্রাফি দেখা এবং ডাউনলোড করে রাখা— দুইই শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে রায় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলেই মনে করছে নানা মহল।
মাদ্রাজ হাই কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এই রায় দিয়েছে ভারতের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার বেঞ্চ।
রায়ে জানিয়েছে, শিশু পর্নোগ্রাফি দেখা এবং ফোনে ডাউনলোড করে রাখা— দুইই পকসো আইনের অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সম্প্রতি ২৮ বছর বয়সি এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফোনে শিশু পর্নোগ্রাফি ডাউনলোড করে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলায় ফৌজদারি কার্যক্রম বাতিল করে মাদ্রাজ হাই কোর্ট জানায়, শুধুমাত্র শিশু পর্নোগ্রাফি ডাউনলোড করে রাখা এবং দেখা শিশু সুরক্ষা আইন (পকসো) এবং তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) আইনের অধীনে অপরাধ বলে গণ্য করা হবে না।
সোমবার সেই মামলাতেই ফের ফৌজদারি কার্যক্রম জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাটি পুনরায় দায়রা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পকসো আইনের শিশু-পর্নোগ্রাফি বিষয়ক ১৫তম ধারাটি উল্লেখ করে রায়ে দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, মাদ্রাজ হাই কোর্টের রায় একটি ‘বড় ভুল’।
বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, শিশু পর্নোগ্রাফি দেখা এবং নিজের কাছে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। ফের একই অপরাধ করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।
কোনও ব্যক্তি শিশু পর্নোগ্রাফির প্রচার করলে কিংবা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করলে জরিমানা-সহ তিন থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে সাত বছর পর্যন্তও কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সংসদে পকসো আইন সংশোধনের পরামর্শও দিয়েছে শীর্ষ আদালত, যাতে ভবিষ্যতে শিশু পর্নোগ্রাফিকে ‘যৌন নিপীড়নমূলক’ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। এই রায়কে একটি ‘মাইলফলক’ হিসাবে দেখছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ও।