১৬ বছর আগে কুমিল্লার দেবিদ্বারের মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন আব্দুস সাত্তার। সে সময় এ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ৩২৬ টাকা আত্মসাতের ওঠে। অভিযোগ ওঠার পর তাকে বরখাস্ত করা হয়।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি মিথ্যা দাবি করে আদালতে মামলা করেন তিনি। মামলাটি লড়েন দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময়। উচ্চ আদালত গত ৩০ এপ্রিল অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহালের রায় দেন। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কলেজে স্বপদে ফিরেছেন তিনি।
অধ্যক্ষের আগমনে কলেজে দেখা যায় সাজ সাজ রব। অধ্যক্ষকে বরণে অপেক্ষায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী। বর্ণাঢ্য র্যালি, ফুলেল শুভেচ্ছা ও বিভিন্ন স্লোগানে প্রায় ১৬ বছর পর কলেজ ক্যাম্পাসে আসেন আব্দুস সাত্তার। পরে অধ্যক্ষের আগমন উপলক্ষে দোয়া আলোচনা সভা হয়।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অধ্যক্ষ পদ থেকে আব্দুস সাত্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
আরও পড়ুন: দুই বিচারকের অপসারণ চাইলেন ব্যারিস্টার খোকন
দেবিদ্বার জোবেদা খাতুন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ মাসুদ পাখীকে আহ্বায়ক, জাফরগঞ্জ মীর আব্দুল গফুর কলেজের অধ্যক্ষ বাবুল ভূঁইয়া ও দুয়ারিয়া এজি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়াকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটি, কলেজ তহবিলের ৩২৬ টাকা আত্মসাৎ করেছেন মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে। এ অভিযোগে তাকে ২০০৯ সালে ১ জানুয়ারি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। ওই বরখাস্তের প্রতিবাদে আব্দুস সাত্তার আদালতে মামলা করেন। ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি উচ্চ আদালত আব্দুস সাত্তারকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদানসহ অধ্যক্ষ পদে বহাল থাকার রায় দেন।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফের মামলাটি চলমান থেকে। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার উক্ত আপিল খারিজ করে তার সমুদয় বকেয়া বেতন ভাতাদিসহ অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহালের রায় বহাল রাখেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার বলেন, রাজনৈতিক প্রভাবে আমাকে বিনা দোষে হয়রানি করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত করাকালে আমার বেতন ভাতাদির অর্ধেক দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সেটি বন্ধ রাখা হয়। কলেজ প্রতিষ্ঠাতাদের হুমকির মুখে আমি কুমিল্লায় বাসা নিয়ে থাকলেও সেখানেও পুলিশ পাঠানো হয়। উচ্চ আদালতে করা মামলা তুলে নিতে হাইকোর্টের বারান্দা থেকে সন্ত্রাসী ক্যাডার দিয়ে আমাকে তুলে এনে নির্যাতন করেছিল।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, আদালতই আব্দুস সাত্তারকে মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমি কাগজপত্র দেখে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছি।