সাইবার নিরাপত্তা আইনটি সংশোধনযোগ্য নয়, এটি বাতিলযোগ্য। এই আইনটি বাতিল করতে হবে। ক্ষমতাসীনরা এই আইনটিকে নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ডিজিটালি রাইট ও নাগরিক আয়োজিত ‘বাতিলযোগ্য সাইবার নিরাপত্তা আইন: জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বক্তারা এসব কথা বলেন।
গোলটেবিল বৈঠকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমি অবিলম্বে এই আইনটি বাতিলের কথা বলব। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে তা করতে দেরি হওয়ার কথা নয়।
সাইবার নিরাপত্তা আইনে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবি করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই আইনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই আইনের অপব্যবহারকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আইনটিতে যারা কর্তৃত্ববাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে, তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রায় এক যুগ পর আয়কর আপিলাত ট্রাইব্যুনালে ২ জেলা জজ নিয়োগ
ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও আইনের পরিবর্তন হয়নি জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এখনো যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে। শুধু ব্যক্তির পরিবর্তন হয়েছে আইনের পরিবর্তন হয়নি। জাতীয় নিরাপত্তার নামে গোয়েন্দা সংস্থা যে চর্চা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটির দৃষ্টান্ত কিন্তু আমরা এখনো দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, এটা যেন না হয় সেখানে আমাদের জোরালোভাবে হাত দিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব রয়েছে, তাদের আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো তৈরির। সেখানে তাঁদের হাত দিতে হবে।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, দেশে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে নিরাপত্তার নামে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা হয়েছে। নতুন আইন করার সময় এ বিষয়টি অপরিহার্য, যাতে করে আইনের নামে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি না হয়।
বৈঠকে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন মন খুলে সমালোচনা করতে। তবে হাসিনার সময়েও মামলা হতো, এখন মামলা হচ্ছে। এটা হয়তো তিনি (ড. ইউনূস) কথার কথা বলেছিলেন।
আর্টিকেল নাইনটিনের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম বলেন, শাসকদের মানসিকতা হচ্ছে হয়রানি করা। সাইবার সিকিউরিটি এই আইনে নিশ্চিত করা যায়নি। নতুন আইন করার ক্ষেত্রে কেউ যাতে ওই আইনে হয়রানি না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
এমআরডিআই-এর হেড অব প্রোগ্রাম অ্যান্ড কমিউনিকেশনস মিরাজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ন্যাশনাল সিকিউরিটির আলোচনাকে আর সাইবার সিকিউরিটির আলোচনাকে যদি আমরা আলাদা করতে না পারি তাহলে আমাদের আরও অনেক বড় অধিকার ক্ষুণ্ন হবে।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ অনেকে।