ভারতীয় হিন্দি সিনেমা বাংলা ভাষায় ডাবিং করে বাংলাদেশের সিনেমা হলগুলোতে প্রদর্শনের দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ রোববার (৩ নভেম্বর) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ আইনি নোটিশ প্রেরণ করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান।
আইনি নোটিশে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ফিল্ম সার্টিফিকেশন বোর্ডের সচিব এবং বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সম্পাদককে বিবাদী করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, হিন্দি ভাষা আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের অফিশিয়াল ভাষা এবং প্রকারান্তরে জাতীয় ভাষা। ভারত দক্ষিণ এশিয়ার একটি শক্তিশালী দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সকল রাষ্ট্রের উপর ভারতের শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্বাধীন রাষ্ট্র দখল করার অভিজ্ঞতা ভারতের রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ভারত ক্ষুদ্র রাষ্ট্র হায়দ্রাবাদকে দখল করেছে এবং স্বাধীন রাষ্ট্র সিকিমকে দখল করে নিজেদের ভূখন্ডের অন্তর্ভুক্ত করেছে।
আইনি নোটিশে আরো বলা হয়েছে, ভারতের হিন্দি সিনেমাগুলো বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। বাংলাদেশের জনগণ টেলিভিশনে ও ইন্টারনেটে ভারতের হিন্দি সিনেমা, বিভিন্ন এপিসোড উপভোগ করে থাকে। কিন্তু ভারতের সদ্য নির্মিত সিনেমাগুলো যখন বাংলাদেশে মুক্তি পায় তখন এটা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা ও উত্তেজনার সৃষ্টি করে।
এভাবে যদি নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের সিনেমা হলগুলোতে ভারতীয় সদ্য নির্মিত হিন্দি সিনেমাগুলো মুক্তি পেতে থাকে তাহলে এটা বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে এবং হিন্দি ভাষার প্রতি বাংলাদেশের জনগণের আগ্রহ বাড়তে থাকবে। এভাবে বাংলাদেশের জনগণ তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে হিন্দি ভাষা চর্চা শুরু করবে এবং হিন্দি ভাষায় অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুন: নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
নোটিশে আরো বলা হয়েছে যে, প্রতিবেশী কোন শক্তিশালী রাষ্ট্রের সাথে ভাষাগত মিল দুর্বল রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ ও সংঘাতে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া, ডোনেটস্ক, খেরসন, লুহানস্ক এবং জাপোরিঝিয়া অঞ্চলগুলো দখল করেছে। এসব অঞ্চলগুলোর মানুষগুলো মূলত রাশিয়ান ভাষায় কথা বলতো। ভাষাগত মিল থাকার কারনে রাশিয়া উদ্বুদ্ধ হয়েছে ইউক্রেনের এই অঞ্চলগুলো দখল করতে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান অনুযায়ী, ভাষাগত মিল একধরনের মানসিক ঐক্য সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের জনগণ যদি হিন্দি ভাষায় অভ্যস্ত হয়ে যায়, তবে অদূর ভবিষ্যতে ভারত উদ্বুদ্ধ হবে বাংলাদেশে আক্রমণ করতে।
নোটিশে আরো বলা হয়েছে, হিন্দি ভাষা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ। সে কারণে ভারতের হিন্দি সিনেমাগুলো বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষায় ডাবিং করে মুক্তি দিতে হবে। তবে বাংলা ভাষায় ডাবিং করার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সমিতির সদস্য অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের কন্ঠ ব্যাবহার করতে হবে।
নোটিশ পাওয়ার ০৩ (তিন) দিনের মধ্যে ভারতীয় হিন্দি সিনেমা বাংলা ভাষায় ডাবিং করে বাংলাদেশের সিনেমা হলগুলোতে প্রদর্শনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে, অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।