কক্সবাজারের ডিসিকে হাইকোর্টে তলব
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী

পঞ্চদশ সংশোধনী অনেক বড় মামলা, সংবিধানের অনেক অনুচ্ছেদকে টাচ করেছে: হাইকোর্ট

বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রুলের শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, এই মামলা অনেক বড় মামলা। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এমন সংশোধনী, যা সংবিধানের অনেক অনুচ্ছেদকে টাচ করেছে।

হাইকোর্ট বলেন, আমরা এই মামলায় এমন রায় দিতে চাই, কেউ যেন বলতে না পারে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়নি। যেটাকে ন্যায়বিচার বলে এই রায়ের মাধ্যমে সেটাই প্রতিষ্ঠা করব।

রাষ্ট্রপক্ষকে এই মামলায় গুরুত্বপূণ সাবমিশন রাখার পরামর্শ দিয়ে হাইকোর্ট বলেন, ৫০ বছর পরেও এই রায়ের কথা মানুষ মনে করবে। তখন তারা দেখবে এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ভূমিকা কেমন ছিল।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদ উদ্দিন আদালতে বলেন, দেশের মানুষের কল্যাণ হয়, রাষ্ট্রের কল্যাণ হয়, এমন বক্তব্যই আদালতে তুলে ধরবে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী রোববার (১০ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন।

আদালতে রুলে শুনানিতে রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে রয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে রয়েছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।

আরও পড়ুনপঞ্চদশ সংশোধনী মামলার ক্লায়েন্ট পুরো বাংলাদেশের জনগণ: হাইকোর্ট

এর আগে গতকাল ৬ নভেম্বর বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রুলের দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, এই মামলাটি কোনো পক্ষের নয়, এটি এখন পুরো বাংলাদেশের মানুষের মামলা।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া।

শুনানিতে তিনি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে একটি ‘মোটিভেটেড অ্যামেন্ডমেন্ট’ বলে উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া বলেন, ‘দেশে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে না হয়, বার-বার যাতে একই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে সে উদ্দেশ্যেই মূলত পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়।’

গত বুধবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের প্রথম দিনের শুনানি শেষ হয়।

সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এ রুল জারি করেন। পরে এই রুলে পক্ষভুক্ত হন বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে দলটির চেয়ারম্যান আল্লামা ইমাম হায়াত পক্ষভুক্ত হন।

২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই সংশোধনীর দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।

এছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বিদ্যমান ৪৫-এর স্থলে ৫০ করা হয়।