জামিন পেলেন গোপালগঞ্জের সেই চার শিশুর বাবা

জামিন পেলেন গোপালগঞ্জের সেই চার শিশুর বাবা

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার আলোচিত সেই চার শিশুর দিনমজুর বাবা জামাল মিয়াকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফিরোজ মামুন জামাল মিয়াকে জামিন দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সদর থানা আমলি আদালত) জিআরও এএসএআই লাভলী।

দিনমজুর জামাল মিয়ার পক্ষে জামিন আবেদন করেন গোপালগঞ্জ জেলা লিগ্যাল এইডের আইনজীবী অ্যাড. শারমিন জাহান।

তিনি বলেন, জেলা লিগ্যাল এইডের পক্ষ থেকে জামাল মিয়ার জামিন আবেদন করি। বিচারক আমাদের কথা বলার আগেই নথি হাতে পেয়ে জামিন মঞ্জুর করেন। হয়তো বিচারক আগে থেকেই জামাল মিয়ার চার সন্তানের সংবাদটির বিষয়ে অবগত ছিলেন। মানবিক দিক থেকে তাকে জামিন দেয়া হয়েছে। এতে করে ওই চার সন্তান ফিরে পেল তার বাবাকে।

আরও পড়ুনমা নেই, কারাগারে বাবা : শিশুদের দেখভাল করতে যে নির্দেশ দিলেন হাইকোর্ট

এর আগে সকালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই ঘটনা নজরে নিয়ে শিশুদের দেখভাল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্থানীয় সমাজসেবা অধিদপ্তর ও গোপালগঞ্জের ডিসিকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

আদালতে এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনেন আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ব্যারিস্টার নাজিয়া কবির ও ব্যারিস্টার সিফাত মাহমুদ শুভ। হাইকোর্টের নির্দেশের পরই জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে জামাল মিয়ার চার শিশুকে দেখতে ছুটে যান কোটালীপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনুর আক্তার। এ সময় চার শিশুর জন্য বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীসহ নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ জামাল মিয়াকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ পরদিন ৯ নভেম্বর জামাল মিয়াকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠান।

গত এক মাস আগে জন্ম নেয় ১৩ বছরের শিশু সাজ্জাদ মোল্লার যমজ বোন। এর একসপ্তাহ পরই তার মায়ের মৃত্যু হয়। দিনমজুর বাবা জামাল মিয়া কারাবন্দি হলে জমজ বোনসহ তিন বোনকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিন পার করছিল সাজ্জাদ।