আদালতের প্রতি অবজ্ঞা : রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলীর কারাদণ্ড

আদালতের প্রতি অবজ্ঞা : রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলীর কারাদণ্ড

আদালতের প্রতি অবজ্ঞা, অশ্রদ্ধা ও ঔদ্ধত্য প্রকাশসহ দায়সারা গোছের প্রতিবেদন দাখিল করে বিচারপ্রার্থীকে হয়রানী করার ঘটনায় রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ.এম ইফতেখার মজিদকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত আসামী হিসেবে উক্ত প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে।

রাজবাড়ীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন হোসেন গত বুধবার (২০ নভেম্বর) এ আদেশ প্রদান করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ আগস্ট রাজবাড়ীর দ্রুত বিচার আদালতে ২০০২ সালের আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন এর ৪ ও ৫ ধারায় মো. দলু মিয়ার দায়েরকৃত (দ্রুত বিচার-৯/২৪) মামলা তদন্তের জন্য রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের ৩ টি ধার্য্য তারিখ অতিক্রান্ত হওয়ার পরও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় গত ৩ অক্টোবর আদালত ওই নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তাগিদ প্রদান করেন।

আদালতের তাগিদ প্রাপ্তির পর নির্বাহী প্রকৌশলী নিজে তদন্ত না করে অধীনস্থ উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হাসান মাহফুজ ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (চ.দা.) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামকে দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে গত ৯ অক্টোবর আদালতে একটি দায়সারা প্রতিবেদন দাখিল করেন।

আরও পড়ুনকক্সবাজারে পৃথক ২ ধর্ষণ মামলায় ৬ আসামীর যাবজ্জীবন

উল্লেখিত বিষয়ে আদালত উক্ত নির্বাহী প্রকৌশলীকে ২০ নভেম্বর সকাল ১১ টায় আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। উল্লেখিত নির্দেশ প্রতিপালন না করে উপরন্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আদালত প্রসঙ্গে অশোভন মন্তব্য সম্বলিত একটি পত্র রাজবাড়ীর বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করেন।

সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে রাজবাড়ীর দ্রুত বিচার আদালতে বিচারক মো. সুমন হোসেন অভিযুক্ত রাজবাড়ী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ.এম ইফতেখার মজিদ- এর বিরুদ্ধে আদালতের আদেশের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আদালতের স্বাধীন বিচারিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে হাজির না হওয়া এবং আদালতের প্রতি অবজ্ঞা,অশ্রদ্ধা ও ঔদ্ধত্য প্রদর্শনসহ দায়সারা গোছের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে বিচার প্রার্থীকে হয়রানী ও ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে অন্তরায় সৃষ্টির কারণে ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৮৫ ধারায় আদালত উক্ত নির্বাহী প্রকৌশলীকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন। একইসঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত উক্ত প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ প্রদান করেন।

এদিকে উল্লেখিত মামলায় গণপূর্থ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দাখিলীয় তদন্ত প্রতিবেদন ত্রুটিপূর্ন হওয়ায় তা বাতিল করে জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১২ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী দিন ধার্য্য করা হয়েছে।