চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা ১১ জনকে আরেক মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. আবু বকর সিদ্দিক এ আদেশ দেন।
এদিন পুলিশের কড়া নিরাপত্তায় আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিক এর আদালতে সকাল সাড়ে ৯টায় শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আদালত গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার আইনজীবী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, সনাতনী জাগরণ মঞ্চের সংগঠক চিম্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও আদালত পাড়ায় ভাঙ্গচুর করার মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত সেটা মঞ্জুর করেন। আদেশের পর তাদের কড়া নিরাপত্তায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
১১ জন হলেন—প্রেমনন্দন দাশ (১৯), রনব দাশ (২৪), বিধান দাশ (২৯), বিকাশ দাশ (২৪), রুমিত দাশ, রাজ কাপুর (৫৫), সামির দাশ (২৫), শিব কুমার দাশ (২৩), ওম দাশ (২৬), অজয় দাশ (৩০) ও দেবী চরণ (৩৬)।
আরও পড়ুন: আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে প্রথমবারের মত আইনবিদ লেখক সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
গ্রেফতার করা ১১ জনই আইনজীবী সাইফুল ইসলাম খুনের মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তারা সবাই নগরীর বান্ডেল রোডের সেবক কলোনি এলাকার বাসিন্দা। গত ২৬ জানুয়ারি বিকেলে তাদেরকে সেবক কলোনি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেদিন রাতেই আইনজীবী আলিফ খুনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর এক পর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তী সময়ে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালি এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। আইনজীবী সমিতি এ হামলার জন্য ইসকন সদস্য ও সমর্থকদের দায়ী করে আসছে। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। আইনজীবী খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।