নির্বাহী বিভাগের ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে প্রচলিত ভ্রাম্যমাণ আদালতকে (মোবাইল কোর্ট) বিচার বিভাগের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন মামলার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দণ্ড প্রদানের ক্ষমতা সংশোধন করে শুধু জরিমানার বিধান এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সুপারিশ করা হয়েছে।
বিচার বিভাগ সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশে বলা আছে, ‘যদিও মোবাইল কোর্ট চলমান। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সাময়িক সাজা ও অর্থদণ্ড দিতে পারেন। এটি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে পরিচালনা করা যেতে পারে।’
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রমকে গতিশীল করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে ২০০৯ সাল থেকে দেশে পরিচালিত হয়ে আসছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আসামির দোষ স্বীকার সাপেক্ষে এই আদালতের সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড দেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে।
তবে প্রায়ই এ আদালতের রায় নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠছে। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে এই আদালত পরিচালনার অনেক অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই জমা হয়ে আছে। সংস্কার কমিশনের সুপারিশে পর্যায়ক্রমে এই আদালতকে বিচার বিভাগের অধীনে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, ২০১৭ সালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বৈধতা নিয়ে তিনটি রিটের শুনানি হয়। এতে মোবাইল কোর্ট আইনের ১৭টি ধারার মধ্যে ১১টি ধারা-উপধারাকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত।
রায়ে বলা হয়, মোবাইল কোর্ট চলবে, কিন্তু সেটি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা পরিচালনা করতে পারবেন না। কারণ, তারা বিচারক নন। এটি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে পরিচালনা করা যেতে পারে।
তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে আপিলটি।