সুপ্রিম কোর্ট এবং অধস্তন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা পরিচালনার জন্য একটি স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের পাশাপাশি নতুন আইনের মাধ্যমে বিদ্যমান বিভিন্ন তদন্ত ইউনিটে নিয়োজিত জনবলের সমন্বয়ে একটি পৃথক তদন্ত সার্ভিস গঠনের সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন।
স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠন
রাষ্ট্রীয় মামলা পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত স্থায়ী ও স্বতন্ত্র সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন পর্যায়ের আইন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের মান সন্তোষজনক নয়।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য একটি স্থায়ী ও স্বতন্ত্র সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন বলে কমিশন মনে করে। প্রস্তাবিত স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিসকে একটি পেনশনযোগ্য স্থায়ী সরকারি চাকরি হিসেবে বিবেচনার সুপারিশ করা হয়েছে খসড়ায়।
প্রস্তাবিত সার্ভিসের সুপ্রিম কোর্ট অ্যাটর্নি সার্ভিস এবং জেলা অ্যাটর্নি সার্ভিস হিসেবে দুটি শাখা প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা গঠন
ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফৌজদারি মামলার গতি-প্রকৃতি এবং ফলাফল প্রাথমিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর নির্ভরশীল। তদন্ত কর্মকর্তা সৎ, সাহসী, দক্ষ ও পেশাদার না হলে তদন্ত প্রতিবেদনে নানা রকম দুর্বলতা থেকে যায়।
কমিশন মনে করে, প্রচলিত তদন্ত ব্যবস্থা এবং নিয়োজিত জনবলকে সুসংগঠিত করার মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থায় তদন্ত প্রক্রিয়ার যথাযথ ভূমিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র, কার্যকর, দক্ষ, নির্ভরযোগ্য, জনবান্ধব এবং প্রভাবমুক্ত তদন্ত সংস্থা গঠন প্রয়োজন।
সুপারিশে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধিসহ অন্যান্য আইন সংশোধন, ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন ও ১৯৪৩ সালের পুলিশ প্রবিধান সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সার্ভিস পুলিশ বাহিনী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা থাকবে।
নিয়োগ, চাকরির শর্তাবলি, নিয়ন্ত্রণ, বাজেট, অবকাঠামো ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোভুক্ত হবে। দায়িত্ব পালন ও ক্ষমতা ব্যবহারে সার্ভিস স্বাধীন থাকবে।
রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে তদন্ত সার্ভিস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হলেও উচ্চতর কমিশনের অনুমতি ছাড়া কাউকে চাকরিচ্যুত করতে পারবে না।