নিয়ামুল হক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ নেতার প্রার্থিতা বাতিলের দাবির পর নির্বাচন কমিশন স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির ২০২৫-২৬ সালের এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
জানা গেছে, নির্বাচনে সভাপতি পদে দুজন প্রার্থীর মধ্যে একজন হচ্ছেন কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এ এস এম আজাদুর রহমান।
গতকাল বুধবার বিকেলের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগ নেতা আজাদুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানান। এই দাবিতে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ের সামনে তাঁরা অবস্থান নেন।
পরে নির্বাচন কমিশন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ সমিতির উপস্থিত সদস্যরা তাৎক্ষণিক বৈঠকের মাধ্যমে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল রাত আটটার পর নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, জেলা আইনজীবী সমিতির আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালের নির্বাচন অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হলো। পরে সমিতির সংবিধান অনুসারে নির্বাচনের বিষয়ে সবাইকে অবগত করা হবে।
আরও পড়ুন: বার নির্বাচন ঘিরে হামলার অভিযোগে বিএনপি সমর্থিত ১১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি কাজী মনজুর আহমেদ বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের আজাদুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা আছে। এই দাবিতে আমরা বারের সামনে অবস্থান করি। রাতে নির্বাচন স্থগিতের কথা জানানো হয়েছে।’
জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আজাদুর রহমানের প্রার্থিতার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আপত্তি দিয়েছে। তাদের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন, সিনিয়র-জুনিয়র আইনজীবীসহ কমিটির সদস্যরা রাতে বৈঠক করেন। বৈঠকে নির্বাচন সাময়িক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী দুই–তিন দিনের মধ্যে আলোচনা করে নির্বাচনের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এদিকে নির্বাচন স্থগিতের ঘটনায় মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। আইনজীবীরা জানান সাধারণত তাদের বারে দলীয়ভাবে কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়না সবাই প্রার্থীর যোগ্যতায় নির্বাচিত হয়ে থাকেন। আবার নির্বাচন স্থগিত করায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক পুনরায় নির্বাচন সম্পন্ন করতে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
আইনজীবীদের ভাষ্য, এটি সম্পূর্ণরূপে নির্বাচন কমিশনারের ব্যর্থতা। তিনি বিষয়টি সম্পর্কে পূর্বেই অবগত ছিলেন পরিস্থিতি এই পর্যন্ত না আসার আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতেন। নির্বাচন কমিশনারের উচিত ছিল পদত্যাগ করা।