ঢাকা আইনজীবী সমিতি যাকে প্রধান বিচারপতির কাছে প্রত্যাহার ও আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছে, সেই ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম বিচারকার্যে যোগদান করেছেন।
তিন দিন ছুটিতে থাকার পর গতকাল রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে তিনি বিচারকাজ পরিচালনা করেন। তবে এদিন তার বিচারকাজ পরিচালনায় বাধা প্রদান করা হয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৬ ফেব্রুয়ারি। সেদিন এক আসামির জামিন নামঞ্জুর করা নিয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বিচারককে উদ্দেশ্য করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় বিচারক এজলাস ত্যাগ করে খাস কামড়ায় চলে যান।
এরপর গত ৮ ফেব্রুয়ারি আইনজীবীরা বিচারকের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের মুখে ওইদিন এজলাসে ওঠেননি বিচারক।পর দিন গত ৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে এজলাসে উঠেন বিচারক।এ সময় আদালতের সামনে নিরাপত্তার স্বার্থে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।
কয়েকজন আইনজীবী নিয়মিত মামলার শুনানি করেন। এরই মাঝে ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির কয়েকজন সদস্যসহ কিছু আইনজীবী বিচারকাজ পরিচালনায় বাধা দেন।
তারা বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি কি পুলিশ দিয়ে কোর্ট চালাবেন? আপনার প্রতি অনাস্থা জানিয়েছি। আপনি চলে যান।’
হট্টগোলের এক পর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক। ওইদিন পরে আর এজলাসে ওঠেননি তিনি।এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টায় আদালতে আসেন বিচারক নূরে আলম।
পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আন্দোলনকারী আইনজীবীরা এসে পেশকারকে বলে যান আদালতে যেন না বসেন। এরপর বিচারক আর এদিন এজলাসে উঠেননি।
এরপর ওইদিন দুপুরের পর সভা করে ওই আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয় ঢাকা আইনজীবী সমিতি।
ওই অবস্থায় তিন দিন ছুটিতে থাকার বিচারক নুরে আলমের বিরুদ্ধে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক, অবিচারিক সুলভ আচরণ, অযাচিত ও অশ্লীল বক্তব্য এবং অসত্য অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে তাকে অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার ও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন পাঠায় ঢাকা আইনজীবী সমিতি।
জানা গেছে, প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন পাঠানোর পর এ নিয়ে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদ্দুজ্জামানের মধ্যস্থতায় বিষয়টি নিয়ে আপাতত একটি মীমাংসা হয়েছে। এ কারণে ঢাকা আইনজীবী সমিতি থেকে বিচারকাজে বাধা দেওয়া হয়নি।
এ সম্পর্কে ঢাকা আইনজীবী সমিতির বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেলের মধ্যস্থতায় আপাতত একটি মীমাংসা হয়েছে। ওনাকে (বিচারক নুরে আলম) বদলি না করা পর্যন্ত বিচারকাজ করতে পারবেন। যেহেতু ওই আদালতে অনেক মামলা রয়েছে। উনি ছুটিতে থাকলে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি হবে। তাই বিষয়টি আমরা ওনার বদলি না হওয়া পর্যন্ত মেনে নিয়েছি।’