জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে অন্যের জমি আত্মসাৎ করার অভিযোগের মামলায় গাজীপুর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মতিউর রহমান মোল্লাকে মেয়ের বিয়ে থাকায় বিশেষ বিবেচনায় আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পৃথক দুই শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমানের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে, এ মামলায় জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এই আদেশের পরে আসামিকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার মেয়ের বিবাহের দিক বিবেচনা করে তাকে ৩ তারিখ পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়েছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী সোহাগ ফকির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ২৬ জানুয়ারি আসামি মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী রেনুয়ারা বেগম বাদীর জমি ফেরত দেওয়ার শর্তে জামিন পান৷ তবে আসামিরা বাদীর জমি ফেরত দেননি। এ কারণে আজকে আসামি মতিউর রহমানের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তবে আসামি মতিউর রহমান মোল্লার মেয়ের বিয়ে আগামী ৩ মার্চ অনুষ্ঠান হওয়ায় আদালত বিশেষ বিবেচনায় এই তারিখ পর্যন্ত জামিন বর্ধিত করেন। একই সঙ্গে মহিলা বিবেচনায় তার স্ত্রীর আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন বহাল রাখেন আদালত, যোগ করেন আইনজীবী সোহাগ ফকির।
আরও পড়ুন: মৃত স্বামীর ঋণের দায়ে কারাগারে স্ত্রী : দুই বিচারককে হাইকোর্টে তলব
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১৯৯৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পীর ইয়েমেনী মার্কেটে বসে শ্রী সরবা চন্দ্র বর্মণের সঙ্গে একটি এওয়াজ পরিবর্তন দলিলের মৌখিক চুক্তি হয়। এওয়াজকৃত জমি সরবা চন্দ্র বর্মণের কাছে বুঝিয়ে না দিয়ে আসামিরা তাদের ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ জমি দলিল করে নেন। আসামিরা প্রতারণা করে সরবা চন্দ্র বর্মণের জমি অন্যের কাছে বিক্রি করেন।
মামলার বাদী বারবার আসামিদের কাছে তার পাওনা জমি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তাগিদ দিলেও তা এখনও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ গত বছরের ২৬ এপ্রিল আসামিরা বাদীর বাসায় মীমাংসার জন্য বসেন।
সেখানে আসামি মতিউর রহমান বাদীকে জানিয়ে দেন, এই জমি কখনও ফেরত দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে বাদী প্রতিবাদ করলে আসামিরা বাদীকে বলেন, তার মেয়ে এসপি (পুলিশ সুপার) বাদীকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলবে। এছাড়াও বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হয়।
ওই ঘটনায় গত বছরের ২ জুন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন সরবা চন্দ্র বর্মণ। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। সম্প্রতি মামলাটি তদন্ত করে অভিযুক্তপত্র দাখিল করে পিবিআই।
আদালত এ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।