কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের পিতার মামলা
নিহত শিহাব কবির নাহিদ

কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের পিতার মামলা

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : কক্সবাজার শহরে বিমানবন্দরের পশ্চিমে বিমান বাহিনীর সদস্যদের সাথে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় শিহাব কবির নাহিদ নামক এক যুবক নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনার এক সপ্তাহ পরে গত ৩ মার্চ (সোমবার) রাতে নিহতের পিতা মো. নাসির উদ্দিন বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াস খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে আসামী হিসাবে কারও নাম নাই। তবে শিহাব কবির নাহিদ নিহতের জন্য ‘বিমান বাহিনীর সদস্যদের’ দায়ী করা হয়েছে।

এজাহারের বলা হয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারী বেলা ১২ টার দিকে স্থানীয় মহিউদ্দিন নামের এক যুবক বাদী ও নিহতের পিতা মো. নাসির উদ্দিনকে অবহিত করেন যে, বিমান বাহিনীর এক সদস্যের গুলিতে তাদের একমাত্র পুত্র সন্তান শিহাব কবির নাহিদ নিহত হয়েছেন এবং তার মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। বাদী হাসপাতালে গিয়ে মরদেহটি দেখেন এবং ময়নাতদন্ত শেষে ধর্মীয় প্রক্রিয়ায় দাফন সম্পন্ন করেন।

বিমান বাহিনীর সদস্য বা অন্য কারও সঙ্গে শিহাব কবির নাহিদের কোন প্রকার বিরোধ নেই উল্লেখ করে এজাহারে দাবি করা হয়েছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টায় স্থানীয় জাহেদুল ইসলাম নামের এক যুবককে বিমান বাহিনীর সদস্যরা ঘাটিতে নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতনের খবরে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং জাহেদুলকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ হয়।

এক পর্যায়ে বিমান বাহিনীর সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে। ওই সময় উৎসুক জনতার সাথে রাস্তায় কি হচ্ছে, তা দেখতে বাড়ি থেকে বের হন শিহাব কবির নাহিদ। কক্সবাজারের সমিতি পাড়ার নাঈমের বাসার সামনে আসলে শিহাব কবির নাহিদের মাথায় গুলি লাগে। এতে আহত নাহিদকে বিমান বাহিনীর সদস্যরা তুলে তাদের ঘাঁটিতে নিয়ে যায়। ওখানে দীর্ঘক্ষণ রক্তরক্ষণে মারা যান নাহিদ।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াস খান জানিয়েছেন, নিহতের পিতা বাদি হয়ে দায়ের করা এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।

এর আগে ১ মার্চ বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট মো. জিয়াউল হক বাদি হয়ে বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে হামলার অভিযোগ এনে কক্সবাজারের সমিতি পাড়ার বাসিন্দা রাহাত ইকবাল ওরফে ইকবাল বাহার ও এজাবত উল্লাহকে এজাহার ভুক্ত এবং ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একই ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় আরও একটি মামলা দায়ের করেছে বিমান বাহিনী। এ মামলায় বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে হামলায় ৪ সদস্য আহত এবং সরকারি গাড়ি ও সম্পদ ভাংচুর করার কথা উল্লেখ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার শহরে বিমানবন্দর পশ্চিমে বিমান বাহিনীর সদস্যদের সাথে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। ওই সময় গুলিবর্ষণে শিহাব কবির নাহিদ নামক এক যুবক নিহত এবং অনন্ত ১৭ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ৩ জন বিমান বাহিনীর সদস্যও ছিলেন। নিহত শিহাব কবির নাহিদ (৩০) একই এলাকার শিক্ষাবিদ নাছির উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী।