আদালতের আদেশ অমান্য করে বার বার অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫৪টি ইট ভাটার মালিকের প্রত্যেককে চার লক্ষ টাকা করে জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই টাকা হাইকোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিচারপতি ফাতেমা নজিব এবং বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় ধ্বংস করে লাইসেন্স ছাড়া অনেক ইটভাটা চলমান থাকার বিষয়ে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে, মানবাধিকার এবং পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ জনস্বার্থে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন।
আদালত শুনানি শেষে রুল জারি করে সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশ কার্যকরী করতে গেলে ইটভাটা মালিকরা অন্য একটি রিট পিটিশন দায়ের করে এবং স্থিতি অবস্থার আদেশ অর্জন করেন। এই রিটে এইচআরপিবি পক্ষভুক্ত হন এবং শুনানি শেষে আদালত উক্ত রুল ডিসচার্জ করেন।
উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে ইট ভাটা মালিকরা আপিল দায়ের করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ৪ জুন হাইকোর্ট রায় প্রদান করেন এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে তাদের আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন এবং আপিল বিভাগ স্টে বা স্ট্যাটাস কুয়া দেননি।
এর কয়েক মাস পরে ইটভাটা মালিকরা অপর একটি রিট পিটিশন দায়ের করে স্থিতি অবস্থার আদেশ অর্জন করেন এবং উক্ত আদেশ ছয় মাসের জন্য বর্ধিত করা হয়।
বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পরে এইচআরপিবির প্রেসিডেন্ট সিনিয়র মনজিল মোরসেদ এ বিষয়ে আদালতকে অভিহিত করেন যে, কতিপয় ইটভাটা মালিকরা একই বিষয়ের উপরে বার বার রিট পিটিশন দায়ের করে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছেন।
এছাড়াও কতিপয় ইটভাটা মালিক ইতঃপূর্বে আদালতের আদেশ জালিয়াতি করেছে এবং এই আদালত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ছয় মাসের জন্য বর্ধিত হওয়া রিট পিটিশনটি আজ বিচারপতি ফাতেমা নজিব এবং বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর আদালতে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত ছয় মাসের বর্ধিত স্থিতি অবস্থার আদেশ প্রত্যাহার করেন এবং রুল ডিসচার্জ করে রায় প্রদান করেন।
আদালত সার্বিক বিবেচনায় রিট পিটিশনারদের সার্বিক কর্মকাণ্ড বিবেচনা নিয়ে একই বিষয় নিয়ে বারবার অবৈধ ইটভাটা পরিচালনায় জড়িত থাকায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫৪টি ইটভাটার মালিকদের প্রত্যেককে চার লক্ষ টাকা করে জরিমানা করার আদেশ দেন এবং আগামী ৩০ দিনের মধ্যে উক্ত টাকা হাইকোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
ইটভাটা মালিকরা হলেন— মোহাম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, মোজাম্মেল হক, ওবায়দুল কবির, শামীমা আক্তার, গিয়াস উদ্দিন, এনামুল হক, নাসির উল আলম, মোহাম্মদ ইসলাম, বিপ্লব কান্তি, আব্দুল কাদেরসহ মোট ৫৪ জন।