দরিদ্র জনগোষ্ঠির খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়ক খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও জালিয়াতির ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও খাদ্য নিয়ন্ত্রককে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
সংক্ষুব্ধ ডিলার আবেদনকারী মো: আসাদুল ইসলামের পক্ষে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জে-ইসলাম জাহিদ এই আইনি নোটিশ প্রেরণ করেন।
জানা গেছে, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর তারিখের খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সকল শর্তাদি পূরণ করে ডিলার নিয়োগে আবেদন করেন মো: আসাদুল ইসলাম। তার আবেদন পত্রটি সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রাথমিক যাচাই করে গ্রহণ করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ আসাদুল ইসলামের আবেদন পত্র থেকে ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর কপিটি সরিয়ে নিয়ে বাছাই এর সময়ে আসাদুল ইসলাম এর আবেদন পত্রটিকে বাতিল ঘোষণা করেন।
অভিযোগ রয়েছে আসাদুল ইসলামের বিপরীতে নির্দিষ্ট বিক্রয় কেদ্রের জন্য স্থানীয় চরবোরহান ইউনিয়নের অন্য একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান ডিলারশিপ পেতে আবেদন করেছেন। উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহামুদুল হাসান সিকদার ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীগণ আসাদুল ইসলামের আবেদন পত্র থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর কপিটি সরিয়ে নিয়ে বাছাইয়ে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করেন যাতে পছন্দসই প্রার্থী ডিলারশিপ প্রাপ্ত হয়।
আরও পড়ুন: আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষার ফি ৩শ টাকা নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন
এ বিষয়ে আসাদুল ইসলামের বড় ভাই দশমিনা উপজেলা ছাত্রদল নেতা রাকিবুল ইসলাম জুয়েল বলেন, “খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু আমার ছোট ভাই এর সাথেই নয় বরং আরও অনেকের সাথে অনিয়ম করে বাদ দেয়া হয়েছে অবৈধ সুবিধা এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে।”
তিনি বলেন, “সকল আবেদনকারীর উপস্থিতিতে বাছাই অনুষ্ঠান হওয়ার নিয়ম থাকলেও শুধুমাত্র হাতেগোনা পছন্দসই কয়েকজন ডিলার এর উপস্থিতিতে বাছাই অনুষ্ঠান হয়েছে। আমার ছোট ভাই আসাদুল এর আবেদন পত্র থেকে জালিয়াতি করে ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর কপি সরিয়ে নিয়ে তাকে অযোগ্য করে অপর পক্ষকে একতরফা, অবৈধভাবে বাছাই করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ বে-আইনি।”
রাকিবুল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় এর কাছে অভিযোগ করা হলে তিনি আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এতেই বোঝা যায়, পুরো ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ইচ্ছাকৃত অনিয়ম করা হয়েছে এবং পছন্দসই ডিলার আবেদনকারীকে বাছাই করা হয়েছে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে। আমরা সকল বৈষম্যমুক্ত একটি দেশ গড়তেই ২৪ এর জুলাই আন্দোলন করেছিলাম মাঠে থেকে। কিন্তু এসব অনিয়ম, অনাচার দেখে আমরা হতাশ হচ্ছি।”
লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণের বিষয়ে অ্যাডভোকেট জে-ইসলাম জাহিদ ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, “আইনজীবী হিসেবে আমাদের অন্যতম কাজ সমাজ ও রাষ্ট্রে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা। তাই সংক্ষুব্ধ পক্ষের বর্ণনাক্রমে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগে যে অনিয়ম হয়েছে তাতে আগামী ০৭ কার্যদিবস এর মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।”