বাংলাদেশের শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বতন্ত্র ইসলামিক ডিপার্টমেন্ট ও শরীয়াহ বোর্ড প্রতিষ্ঠার বিষয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে দায়েরকৃত এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি বিচারপতি রাজিক আল জলিল এবং বিচারপতি সাথিকা হোসাইনের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এর আগে বাংলাদেশের আপামর মুসলিম জনগোষ্ঠীর পক্ষে শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বতন্ত্র ইসলামিক ডিপার্টমেন্ট ও শরীয়াহ বোর্ড প্রতিষ্ঠার দাবিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান।
রিট আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের দুই ধরনের ব্যাংকিং সিস্টেম চালু আছে, প্রথমত সুদ ভিত্তিক কনভেনশনাল ব্যাংকিং, দ্বিতীয়ত ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকিং। বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বী জনণন তাদের ধর্ম পালনের অংশ হিসেবে শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে লেনদেন করে থাকেন কারণ ইসলাম ধর্মে সুদ খাওয়া হারাম।
এছাড়া বাংলাদেশ সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ধর্মচর্চা করা মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, বাংলাদেশের শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলো সরাসরি সুদের সাথে জড়িত হয়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলো অন্যান্য সুদ ভিত্তিক ব্যাংক থেকে সুদে টাকা ধার নিয়েছে এবং ইসলাম ধর্মের নীতি লংঘন করেছে।
অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান দায়িত্ব। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক তার আইনি দায়িত্ব পালনে ব্যার্থ হয়েছে।
রিট আবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২, অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান দায়িত্ব হলেও ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন ইসলামী ডিপার্টমেন্ট নেই।
পাশাপাশি শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলোর প্রোডাক্টগুলো পর্যালোচনা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব কোন শরীয়াহ বোর্ড নেই । ফলশ্রুতিতে, বাংলাদেশ ব্যাংক তার অধস্তন শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলোকে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ব্যার্থতার কারণে বাংলাদেশের শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলো সুদ ভিত্তিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত হয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের আপামর মুসলিম জনগোষ্ঠীর সাথে প্রতারণা করছে।